ইয়েমেনকে ‘দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্ত’ থেকে ফিরিয়ে আনতে জেনেভায় সম্মেলন

ইয়েমেনগৃহযুদ্ধের কারণে ভয়াবহ মানবিক সংকটে থাকা ইয়েমেনের জনগণের জন্য তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে চলছে মানবিক সহায়তা সম্মেলন। মঙ্গলবার(২৫ এপ্রিল) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এ সম্মেলন শুরু হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, জাতিসংঘ, সুইজারল্যান্ড ও সুইডেনের উদ্যোগে আয়োজিত ওই সম্মেলনে দাতব্য সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের দরিদ্রতম দেশ ছিল ইয়েমেন। আর দুই বছরের গৃহযুদ্ধের পর সেই দেশটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ডব্লিউএফপি। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, ইয়েমেনের ২ কোটি ৫৬ লাখ মানুষের মধ্যে ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা প্রয়োজন। প্রায় ৭০ লাখ মানুষ ‘মারাত্মকভাবে খাদ্য অনিরাপত্তায়’ ভুগছে, অর্থাৎ তাদের জন্য দ্রুত খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। ২২ লাখ শিশু প্রচণ্ডরকমের পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। ইয়েমেনের বিপর্যয়পূর্ণ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ২.১ বিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তা চাওয়ার পরও এখন পর্যন্ত মাত্র ১৫ শতাংশ তহবিল জমা হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে ইয়েমেনে জরুরি সহায়তা নিয়ে আলোচনা করতে মঙ্গলবারের সম্মেলন আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ ও খাদ্য কর্মসূচি ডব্লিউএফপি ইয়েমেন পরিস্থিতি নিয়ে নতুন এক বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ইয়েমেনের ৭০ লাখ মানুষ প্রচণ্ডরকমের খাদ্যাভাবে আছে, তারা জানে না তাদের জন্য পরের বেলার খাবারটি কোথা থেকে আসবে।  

মানবিক সহায়তাকারী সংগঠনগুলো চায়, সহায়তার অপেক্ষায় থাকা লোকজনের কাছাকাছি পৌঁছাতে। আর এর জন্য সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলা স্থগিত চায় তারা।

মানবিক সহায়তাকারী সংগঠনগুলো বলছে, জেনেভায় যেসব দেশের মন্ত্রীরা একত্রিত হয়েছেন, তাদের উচিত ইয়েমেনে সহায়তার ব্যাপারে অঙ্গীকার করা।

প্রসঙ্গত, ২৬ মার্চ ২০১৫ থেকে ইয়েমেনে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান পরিচালনা শুরু করে সৌদি আরব ও তার মিত্র দেশগুলো। ইয়েমেনের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আব্দ-রাব্বু মানসুর হাদির কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এ বিমান অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর আগে দেশজুড়ে ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীদের উত্থানের মুখে দেশ ছাড়েন মানসুর হাদি।

/এফইউ/