গত বছরের জুলাইয়ে তুরস্কে যে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা হয়েছিল তার নেপথ্যে ফেতুল্লাহ গুলেনকে দায়ী করে থাকে তুর্কি সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেইমান সয়লু জানান, ‘আমাদের পুলিশ বাহিনীতে গুলেনের একটি অনুপ্রবেশকারী নেটওয়ার্ক রয়েছে। সেই নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে রাতভর অভিযান ও ধরপাকড় চালানো হয়েছে। তাদেরকে সিক্রেট ইমাম নামে ডাকা হয়ে থাকে।’
আঙ্কারায় সুলেইমান সয়লু সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৭২টি প্রদেশে অভিযান চালিয়ে এক হাজার ৯ জন সিক্রেট ইমামকে আটক করা হয়েছে এবং অভিযান এখনও চলছে।’
উল্লেখ্য, ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় তুর্কি সেনাবাহিনীর একাংশ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশের শাসনভার নেওয়ার দাবি করে, যা দেশটির টেলিভিশনে প্রচার করা হয়। মধ্যরাতে ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দিয়ে তুরস্কের ডানপন্থী সরকার উচ্ছেদের দাবি করে দেশটির সেনাবাহিনীর একাংশ। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থে’ সশস্ত্র বাহিনী তুরস্কের ক্ষমতা দখল করেছে। টেলিভিশনের পর্দায় পড়ে শোনানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, এখন ‘শান্তি পরিষদ’দেশ চালাবে এবং কারফিউ ও সামরিক আইন জারি থাকবে। একই সঙ্গে তুরস্কের বিদ্যমান বৈদেশিক সব সম্পর্ক বহাল থাকবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা প্রাধান্য পাবে। কারফিউর বিরোধিতা করে এরদোয়ানের সমর্থকরা রাস্তায় নেমে এলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
শেষ পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর সব অংশের সমর্থন না থাকায় এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের তৎপরতায় জনগণ রাস্তায় নেমে এলে বিদ্রোহী সেনাদের উদ্যোগ ভেস্তে যায়। ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার পর আরও সর্বাত্মক হয়ে ওঠেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। শুরু হয় ব্যাপক ধরপাকড়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার মানুষকে গ্রেফতার করেছে তুর্কি সরকার। এছাড়া আরও ১ লাখ ২০ হাজার মানুষকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ওই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার জন্য শুরু থেকেই গুলেনকে দায়ী করে আসা হচ্ছে। ১৯৯৯ সাল থেকে গুলেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। নির্বাসনে থেকেই তিনি ‘হিজমেত’ নামক একটি আন্দোলন পরিচালনা করেন। ২০১৩ সালে দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলন চলাকালে এরদোয়ানের জাস্টিস অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনে গুলেনপন্থীরা।
/এফইউ/বিএ/