কোরিয়া উপদ্বীপে যুদ্ধাবস্থা নিয়ে ট্রাম্পকে পুতিনের উদ্বেগ

ট্রাম্প-পুতিনমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক টেলিফোন কথোপকথনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কোরিয়া উপদ্বীপে যুদ্ধাবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। হোয়াইট হাউস ও ক্রেমলিনের বিবৃতির বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।

এক বিবৃতিতে ক্রেমলিন জানিয়েছে, ‘কোরিয়া উপদ্বীপের ভয়াবহ অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভ্লাদিমির পুতিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং উত্তেজনা কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন।’

হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘উত্তর কোরিয়ার ভয়াবহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সর্বোচ্চ কি কি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়েও দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়।

শনিবার ভোরে পিয়ংইয়ংয়ের উত্তর দিকের দক্ষিণ পিয়ংগান এলাকার একটি ঘাঁটি থেকে একটি মধ্যপাল্লার ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হয় বলে দক্ষিণ কোরীয় সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ জানিয়েছে।

এর প্রতিক্রিয়ায় সোমবার  দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের বিমান বাহিনীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যৌথ সামরিক মহড়া চালানো হয়। এতে পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম দুটি মার্কিন বি-১বি যুদ্ধবিমান অংশ নেয়। উত্তর কোরিয়ার অভিযোগ, বিমানগুলো উত্তর কোরিয়ার প্রধান স্থাপনাগুলোতে পারমাণবিক বোমা ফেলার মহড়া দেখিয়েছে। ওই সামরিক মহড়ার পর এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।

উল্লেখ্য, মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ভিনসন স্ট্রাইক গ্রুপকে কোরিয়া উপদ্বীপে পাঠানোর ঘোষণার পর শুরু হওয়া যুদ্ধাবস্থার মধ্যেই নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন সাবমেরিনের উপস্থিতি। পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী ইউএসএস মিশিগান গত মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছায়। সাবমেরিনটির কার্ল ভিনসন রণতরীর সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে বলে মার্কিন নৌবাহিনী জানিয়েছে।

পিয়ংইয়ং কোরিয়া উপদ্বীপে যে কোনও সামরিক মহড়াকে আগ্রাসন বলে মনে করে। তারা এর প্রতিক্রিয়ায় হুমকি দিয়েছে, ‘মার্কিন আগ্রাসন রুখতে প্রয়োজনে রণতরী ডুবিয়ে দেওয়া হবে।’    

ওই টেলিফোন কথোপকথনে সিরিয়ায় যুদ্ধ নিরসনে অস্ত্রবিরতি কার্যকর করতে একমত হয়েছেন দুই নেতা। প্রায় এক মাস আগে সিরিয়ায় মার্কিন জাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্কে অবনতি ঘটে। ওই ঘটনার পর এবারই প্রথম দুই নেতার মধ্যে সরাসরি কথা হলো। হোয়াইট হাউস ও ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়, দুই নেতার কথপোকথন ছিল খুবই অন্তরঙ্গ। তাদের মধ্যে সামনাসামনি বৈঠকের বিষয়েও আলোচনা হয়।

আগামী জুলাইয়ের প্রথমদিকে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে হ্যামবার্গে যাবেন ট্রাম্প ও পুতিন। সেখানে তাদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হতে পারে বলেও আলোচনা হয়েছে।

/এসএ/