পারিবারিক ব্যবসায় ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ নিয়ে আবারও সমালোচনার মুখে ট্রাম্প

nonameপারিবারিক ব্যবসায় ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ নিয়ে আবারও সমালোচনার মুখে পড়েছেন ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ স্লোগান দেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চলতি সপ্তাহে ‘মেড ইন আমেরিকা’ স্টিকারযুক্ত বেশকিছু সামগ্রী প্রদর্শন করেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পণ্যসামগ্রীকে উৎসাহিত করা, তথা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাই ছিল এর লক্ষ্য।  তবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং সমালোচকরা ট্রাম্পের এমন ভূমিকার সমালোচনা করছেন। তাদের মতে, এটা দ্বিমুখী আচরণ। একদিকে পারিবারিক ব্যবসায় বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মতো দেশগুলোর তৈরি সামগ্রীর বিপণন করছেন ট্রাম্প।

আমেরিকানদের চোখে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক ভাষণের সবচেয়ে চুম্বক বাক্যগুলোর একটি ছিল ‘বাই আমেরিকান, হায়ার আমেরিকান’। দর্শকদের তুমুল করতালি তারই জানান দিয়েছিল। তবে যে শার্ট পরে তিনি এই অভিষেক ভাষণ দিচ্ছিলেন সেটি ছিল বাংলাদেশে তৈরি। আর ওই শার্টের কলারে বাঁধা লাল টাইটি চীনে তৈরি। সমর্থকদের জন্য বানানো বেসবল ক্যাপগুলোও ছিল বাংলাদেশ, চীন ও ভিয়েনতনামে বানানো। সংরক্ষণবাদের কথা বললেও নির্বাচনি প্রচারণায় এমনকি শপথ অনুষ্ঠানেও ব্যবহৃত তার পোশাক ও বেসবল ক্যাপগুলোতে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’- এর মতো লেখা নিয়ে আপত্তি উঠেছিল।

এনবিসি টেলিভিশনের ‘এনবিসি নাইটলি নিউজ’ অনুষ্ঠানের সিনিয়র নিউজ এডিটর ব্র্যাড জ্যাফি। টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ওয়াশিংটন ডিসি’র ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে চীন, ভিয়েতনাম, পেরু, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে তৈরি পোশাক সামগ্রী বিক্রি হয়। আর এমন অবস্থার মধ্যেই ‘মেড ইন আমেরিকা ট্রেডমার্ক সপ্তাহ’ পালন করেছে হোয়াইট হাউস।

স্থানীয় সময় সোমবার বিকালে হোয়াইট হাউসের এ সংক্রান্ত কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ট্রাম্প। এরপরই দ্বিমুখী নীতির জন্য তার সমালোচনায় মুখর হন অনেকে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক মিতা গোল্ড। তিনি ট্রাম্পের ‘মেড ইন আমেরিকা ট্রেডমার্ক সপ্তাহ’ উদ্বোধন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মিতা গোল্ড পিবিএস নিউজকে বলেন, ফার্স্ট ডটার ইভানকা ট্রাম্পের ব্র্যান্ড বিদেশি ফ্যাক্টরিতে তৈরি করা পোশাক ও জুতা বিক্রি করছে।

মিতা গোল্ড বলেন, আমরা বর্তমানে সুনির্দিষ্টভাবে পাঁচটি দেশ থেকে তার পণ্যসামগ্রী আসার বিষয়টি চিহ্নিত করতে পেরেছি। এই দেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনাম। ২০১৩ সালের আগের কাস্টম রেকর্ডে দেখা গেছে, ইভানকা ট্রাম্পের ব্র্যান্ডের কিছু জুতা আসে ইথিওপিয়া থেকে। ব্র্যান্ডটি আমাদের বলে থাকে, তারা উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী। কিন্তু বাস্তবে এটা সম্ভব বলে তারা মনে করে না।

ডানপন্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বরাবরই সংরক্ষণশীল অর্থনীতির পক্ষে তার জোরালো অবস্থান জানিয়েছেন। অর্থনীতি খাতে যুক্তরাষ্ট্রের সুবিধাকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। তবে নির্বাচনি প্রচারণায় সেই প্রতিশ্রুতি ভেঙে বাংলাদেশে তৈরি বেসবল ক্যাপ ব্যবহার করেছেন তিনি। তার কন্যার ব্র্যান্ড এখনও বিদেশে প্রস্তুতকৃত পোশাক ও জুতা মার্কিন ক্রেতাদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করছে।

/এমপি/