আল-আকসায় ইসরায়েলি ‘নমনীয়তার প্রথম চিহ্ন’

জেরুজালেমের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদের প্রবেশপথে বিতর্কিত মেটাল ডিটেক্টরের বিকল্প চিন্তা করার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। এ ব্যাপারে জর্দানসহ আরব বিশ্বের অন্যান্য দেশের পরামর্শ চেয়েছে তারা। তেল আবিবের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সম্পাদক একে ইসরায়েলি নমনীয়তার প্রথম চিহ্ন হিসেবে দেখছেন।
আল আকসা প্রাঙ্গনে ইসলায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী

আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে তিন আরব-ইসরায়েলির হাতে দুই পুলিশ খুন হওয়ার পর ইসরায়েলি বাহিনী ধাওয়া করে হত্যা করে তিন হামলাকারীকেই। মসজিদের প্রবেশপথে মেটাল ডিটেক্টরসহ আরোপিত হয় বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ। শনিবার বিক্ষোভরত ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী। আল জাজিরার খবর থেকে জানা যায়, এদিনের বিক্ষোভ চলাকালে আরও ২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তা সত্ত্বেও মেটাল ডিটেক্টরে নিরাপত্তা তল্লাশি না মানার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় জানিয়েছে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিরা।  

মেটাল ডিটেক্টর সরিয়ে নিয়ে অন্য কী পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়, সে ব্যাপারে পরামর্শের জন্য মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলি মেজর জেনারেল। মেটাল ডিটেক্টর প্রশ্নে জেনারেল ইয়ভ মোরদেশাই বিবিসি অ্যারাবিককে জানান, ‘আমাদের প্রত্যাশা জর্দান এবং আরব বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশ চলমান সংকটের ব্যাপারে ভিন্ন কোনও নিরাপত্তা সমাধান সুপারিশ করবে। তিনি আরও বলেন, ‘ইলেক্ট্রনিক, সাইবার কিংবা আধুনিক প্রযুক্তির যে কোনও নিরাপত্তা হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে সমাধানে আসতে চায় ইসরায়েল। আমরা নিরাপত্তা সমাধান চাই, রাজনৈতিক কিংবা ধর্মীয় সমাধান নয়।’ বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সম্পাদক অ্যালান জনস্টন বলেন, চলমান সংকট নিয়ে ইসরায়েলের অবস্থান থেকে নমনীয়তার প্রথম চিহ্ন এটি।


সিএনএন-এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আল-আকসা মসজিদকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট তীব্র উত্তেজনা নিরসনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে মিশর, ফ্রান্স ও সুইডেন। ওই সংস্থায় নিযুক্ত সুইডিশ কূটনীতিক কার্ল স্কাউ এ খবর জানিয়ে বলেছেন, জেরুজালেমে উত্তেজনা অবিলম্বে কমিয়ে আনার উপায় নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের উচিত জরুরি আলোচনায় মিলিত হওয়া। আগামীকাল (সোমবার) রুদ্ধদ্বার কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

১৯৬৭ সালে যখন ইসরায়েল এই এলাকায় প্রবেশাধিকার পায় তখন শুধু মুসলিমরাই আল-আকসায় নামাজ পড়তে পারতো। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় প্রার্থনার সুযোগ পেত ইহুদীরা। মেনে চলতে হতো অনেক নিয়ম। বিগত ৫০ বছরে এই চিত্র অনেকটাই পাল্টে গেছে। আর ইসরায়েল এখন আল-আকসার দখল নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় রেড ক্রিসেন্টের ভাষ্য অনুযায়ী, জেরুজালেমে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে পুলিশি অ্যাকশনে সাড়ে চারশ মানুষ আহত হয়েছে। অন্যান্য সংবাদমাধ্যমসূত্রে পশ্চিম তীরেও প্রায় ২শ ফিলিস্তিনর আহত হওয়ার খবর জানা গেছে।  তিন ফিলিস্তিনিকে হত্যার পর ইসরায়েল সরকারের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।

/বিএ/