কিউবায় মার্কিন দূতাবাসকর্মীদের ওপর সনিক অ্যাটাক, অসুস্থ ২১

Cubaকিউবার মার্কিন দূতাবাসকর্মীদের ওপর রহস্যজনক হামলা চালানো হয়েছে। দূতাবাসের পাশাপাশি বেশকিছু হোটেলেও এমন হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কানাডার দুই নাগরিকসহ ২১ জন। এ ঘটনায় দূতাবাসের অর্ধেকেরও বেশি কর্মীকে সরিয়ে নিচ্ছে ওয়াশিংটন। শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর থেকে এসব তথ্য জানানো হয়। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রাথমিকভাবে একে সনিক অ্যাটাক বা শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। তবে হামলার ধরনের ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত নয় যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে এফবিআই, রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ এবং কিউবা’র কর্তৃপক্ষ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ দূতাবাসকর্মীদের সপরিবারে কিউবা ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। বলা হয়েছে, শুধু ‘জরুরি দায়িত্বরত কর্মকর্তারা’ কিউবায় অবস্থান করুন। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের কিউবা সফর থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সন্দেহজনক এ হামলার শিকার ব্যক্তিরা মস্তিষ্কে সামান্য ক্ষতিসহ কানে না শোনা, মাথা ঘোরা এবং বমি বমি ভাবের মতো সমস্যায় ভুগছেন।

কিউবা’র মার্কিন দূতাবাসকর্মীদের ওপর সনিক হামলা অবশ্য নতুন নয়। ২০১৬ সাল থেকে এর সূত্রপাত। এর প্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের কথা জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। তিনি বলেন, হাভানায় মার্কিন দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে।

শীতল যুদ্ধে ভিন্ন অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র-কিউবা সম্পর্কে নানা জটিলতা থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেয় উভয় দেশের কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে ২০১৪ সাল থেকে  সম্পর্কোন্নয়নের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দুই দেশ একটি বাণিজ্য চুক্তিতেও উপনীত হয়। ওই চুক্তিকে দেশ দুটির দীর্ঘ বৈরিতার অবসানের একটি পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হয়েছিল। তবে গত জুনে ওবামা প্রশাসনের কিউবা নীতি পরিবর্তনের ঘোষণা দেন ট্রাম্প।

ওবামার কিউবা নীতিকে ‘একতরফা’ দাবি করে ট্রাম্প জানান, তার নতুন নীতিতে কিউবায় ভ্রমণ এবং অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। অবশ্য আর্থিক ও ভ্রমণে বিধিনিষেধ জারি করলেও দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার কথা বলেন ট্রাম্প। এর তিন মাসের মাথায় সনিক অ্যাটাকের ঘটনায় কিউবার মার্কিন দূতাবাসের অর্ধেকেরও বেশি কর্মীকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে এ হামলার সঙ্গে কিউবা সরকারের কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছেন কিউবা’র প্রেসিডেন্ট রাউল ক্যাস্ট্রো।