যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের এবারের দাবানলকে ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী দাবানল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দাবানলজনিত কারণে মৃতের সংখ্যা অন্তত ৪০ জনে দাঁড়িয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ। ৮৪ বছর আগের এক দাবানলে যুক্তরাষ্ট্রে ২৯ জনের প্রাণহানি হয়েছিল। এর আগে সেটিই ছিল রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যুর ঘটনা।
দাবানলের ১৬টি প্রধান ধারার সঙ্গে সাতদিনেরও বেশি সময় ধরে এয়ার ট্যাঙ্কার ও হেলিকপ্টারের সহায়তা নিয়ে লড়াই করে যাচ্ছেন ১০ হাজারেরও বেশি দমকল কর্মী। ভয়াবহ এই দাবানল ঠেকাতে ক্যালিফোর্নিয়ার দমকল কর্মীদের সঙ্গে ওরেগন, ওয়াশিংটন, অ্যারিজোনা, কলোরাডো ও নেভাদা অঙ্গরাজ্যের দমকল কর্মীরাও যোগ দিয়েছেন। আগুনে পুড়ে এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৭০০ স্থাপনা ভস্মীভূত হয়েছে। স্যান ফ্রান্সিসকো শহরের উত্তর দিকে প্রায় ৮৬৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। শনিবার সেখানকার ৮০ কিলোমিটার উত্তরে সান্তা রোসা শহর থেকে তিন হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সান্তা রোসা শহরের এখনও অক্ষত আছে এমন এক বাড়ির মালিক মলি কুরল্যান্ড বলেন, “যারা ঘরবাড়ি হারায়নি সেইসব লোকজনও ভীষণ অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগের মধ্যে আছে। যে এলাকায় আমরা বাজার-সদাই করতাম সেখানে এখন কিছুই নেই। আমার প্রিয় রেস্তোরাঁটিও আর নেই।”
এ পর্যন্ত দাবানল কবলিত এলাকাগুলোর প্রায় এক লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এলেমেলো বাতাসে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া দাবানলে কারণে শনিবার আরও কয়েক হাজার স্থানীয় বাসিন্দা ঘরবাড়ি ছেড়েছেন। দাবানলে এ পর্যন্ত প্রাণ হারানো ৪০ জনের মধ্যে ২২ জন মারা গেছেন সোনোমা কাউন্টিতে। এই কাউন্টির ২৩৫ জন বাসিন্দা এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। চলতি দাবানলে নিহতের সংখ্যা ১৯৩৩ সালে লস অ্যাঞ্জেলসের গ্রিফিথ পার্কের দাবানলে নিহত ২৯ সংখ্যাটিকে ছাড়িয়ে গেছে।
“সত্যি ক্যালিফোর্নিয়া যেসব ভয়াবহ শোচনীয় ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে এটি সেগুলোর মধ্যে একটি। ধ্বংসের পরিমাণ অবিশ্বাস্য। এটি এমন এক আতঙ্ক যা কেউ কখনো কল্পনাও করতে পারবে না,” সান্তা রোসা শহর পরিদর্শনের পর বলেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর জেরি ব্রাউন।