দেশে ফিরেই হারিরি জানালেন, আপাতত তিনিই প্রধানমন্ত্রী থাকছেন

জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে পদত্যাগের ঘোষণা স্থগিত করেছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ‘দেশ ও জাতির নিরপত্তা রক্ষা’য় প্রেসিডেন্ট মাইকেল আউনের সঙ্গে একযোগে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সৌদি আরবে গিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পার করে দেশে বুধবার দেশে ফেরেন হারিরি।
সাদ হারিরি

মঙ্গলবার রাতে রাজধানী বৈরুতের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান হারিরি। সৌদি আরবের বিরুদ্ধে তাকে অপহরণ করার অভিযোগ এনেছিল তার দেশ। রাজনীতিবিশ্লেষকরাও তার পদত্যাগের নেপথ্যে সৌদি চাপকেই কারণ মনে করেন।  বিবিসি তার বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, সৌদি আরবের চাপে হিজবুল্লাহ ও তেহরানবিরোধী অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ নাকচ করেছেন তিনি।
আল জাজিরার খবর অনুযায়ী, দেশে ফেরার পর দেওয়া রাষ্ট্রীঁয় টেলিভিশনের ভাষণে সৌদি বিরোধী কোনও অবস্থান নিতে দেখা যায়নি। তবে সৌদি আরবে গিয়ে তিনি হিজবুল্লাহ ও ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেও বুধবার তিনি এ প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে রাজনৈতিক ঐক্যের পক্ষে বলেছেন। প্রেসিডেন্ট আউনের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের পর দেয়া বক্তব্যে  হারিরি বলেন, ‘এই মুহুর্তে আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় লেবাননের সবার বাড়তি সহযোহিতা দরকার... অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে দেশের স্বার্থকে প্রাধ্যান্য দিয়ে আমি সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের দিকে জোর দিতে চাই।’

এর আগে বৈরুতে আউনসহ লেবাননের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে দেশটির ৭৪তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেন হারিরি। 

গত ৪ নভেম্বর সৌদি আরব সফরে গিয়ে হঠাৎ করেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন সাদ হারিরি। পদত্যাগের কারণ হিসেব প্রাণভয়ের কথা উল্লেখ করেন তিনি। এজন্য দায়ী করেন ইরান ও হিজবুল্লাহকে। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা সৌদি আরবের চাপেও পদত্যাগ করেছেন হারিরি। তবে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেও লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন প্রধানমন্ত্রী হারিরির পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি এবং তাকে বৈরুতে ফিরে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

পার্স টুডের বুধবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইপ্রাস সফরের আগে মঙ্গলবার সাদ হারিরি মিসর সফরে যান এবং সেখানে দেশটির প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আস-সিসির সঙ্গে বৈঠক করেন। কায়রোয় এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে হারিরি তার প্রতি সমর্থন জানানোর জন্য সিসি’কে ধন্যবাদ জানান।পদত্যাগের কথা ঘোষণা করার পর টানা দুই সপ্তাহ রিয়াদে অবস্থান করেন হারিরি। এরপর গত শনিবার তিনি রিয়াদ থেকে প্যারিসে যান এবং ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করেন।