ইন্ডিয়ানার সান্তা ক্লজ



লাল টুসটুসে তার গাল। মুখে ধবধবে সাদা লম্বা দাড়ি। পরনে পা থেকে মাথা পর্যন্ত লাল রঙের স্যুট। বিশাল বপু জুড়ে কালো রঙের বেল্ট। ক্রিসমাসের মৌসুম এলেই সান্তা ক্লজের এমন প্রতিকৃতি দেখা যায় পশ্চিমা বিশ্বে। সেখানকার লোক-কাহিনীতে ক্রিসমাসে সান্তা ক্লজ সবার জন্য উপহার নিয়ে আসেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যে এমন একটি শহর রয়েছর, যার নামকরণ হয়েছে সান্তার নামে। 'সান্তা ক্লজ টাউন' নামের সেই শহরে যেন সারা বছরই ক্রিসমাস। সেখানে বছরে অন্তত ২০ হাজার চিঠি আসে সান্তার নামে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের `সান্টা ক্লজ টাউন`

শহরের সীমানা যেখানে শুরু সেখানেই রয়েছে সান্তা ক্লজের বিশাল আকারের একটি ভাস্কর্য। একই রকম আরও ভাস্কর্য রয়েছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সামনে। এখানকার মূল রাস্তার নাম ক্রিসমাস বুলোভার্ড। ক্রিসমাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা লোক-কাহিনীতে যেসব চরিত্র রয়েছে তাদের নামে শহরে রয়েছে আরও অনেক কিছু। রয়েছে রুডল্ফ লেন আর ক্রিসমাস লেক। শহরের সান্তা ক্লজ যাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা প্যাট কুক বলছেন ক্লজের নামে শহরটিতে প্রতি বছর যে চিঠিগুলো আসে, প্রেরকের কাছে সেগুলোর উত্তরও পৌঁছে যায়। নভেম্বর মাসের শেষ নাগাদ প্যাট কুকসহ শ'দুয়েক স্বেচ্ছাসেবী এসব চিঠির জবাব দেন।

স্যান্টা ক্লজের নামে শহরটিতে প্রতি বছর হাজার হাজার চিঠি আসে১৮৫৫ সাল পর্যন্ত শহরটির নাম ছিল সান্তা ফি। সেসময় শহরটিতে একটি নতুন পোষ্ট অফিস চালু করতে গিয়ে জানা যায়, আরও একটি শহর রয়েছে সান্তা ফে নামে। চিঠি পাওয়ার ঝামেলা এড়াতে তখন নাম না বদলে আর উপায় ছিল না। তবে শহরের বাসিন্দারা সান্তা ক্লজ নামটি ঠিক কিভাবে বেছে নিলেন, সেই গল্পের কতটুকু বাস্তব আর কতটুক আসলেই গল্প -সেটি এত দিন পর নিশ্চিত জানা যায় না। এখানে আসা বহু চিঠির খামে কেবল সান্তা ক্লজের নামটাই লেখা থাকে।

স্যান্টা ক্লজ শহরের গীর্জা এবং পোস্ট অফিসপশ্চিমা লোক-কাহিনী অনুযায়ী ক্রিসমাসে সান্তা ক্লজ সবার জন্য যে উপহার নিয়ে আসেন, তা পেতে সারাবছর দুষ্টুমি থেকে দূরে থাকতে হবে। "যেমন ধরুন সারা বছর ভালো হয়ে চলার জন্য আমরা ধন্যবাদ দেই। স্কুলে ভালো করে পড়াশোনা করার জন্য, অথবা ভাইবোনের সঙ্গে ঝগড়া না করার উপদেশ দেই। ছোট শিশুদের যেসব উপদেশ বানী দেয়া হয়, সেগুলো আর কি। ওদেরকে একটু জানানো যে সান্তা তাদের চিঠিটি পড়েছেন" বলছেন প্যাট কুক । চিঠির উত্তর লেখার দায়িত্ব যেমন স্বেচ্ছাসেবীরাই নিয়ে থাকেন, তেমনি এর খরচও চলে মূলত দানের অর্থে। শহরের বাসিন্দা মোটে দু'হাজার। তবে বছর জুড়ে সেখানে বেড়াতে আসেন অনেক মানুষ।

সহযোগীর সঙ্গে প্যাট কুক
বড়দিনকে সামনে রেখে ছয়ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে মিসিসিপি থেকে এসেছিলেন আর্মস্ট্রং পরিবার। "ক্রিসমাসে কোথায় বেড়াতে যাওয়া যায় সে নিয়ে আমরা গবেষণা করছিলাম। আমরা ক্রিসমাসে কোথাও না কোথাও যাওয়ার চেষ্টা করি। ফেইসবুকে হঠাৎ একটা আর্টিকেল দেখলাম যেখানে লেখা ছিল পরিবার নিয়ে ক্রিসমাসে বেড়াতে যাওয়ার সেরা দশটি যায়গা কোনগুলো। এভাবেই বুদ্ধিটা পেলাম। ঐ লিস্টে যে স্থানগুলোর নাম ছিল তার মধ্যে এই শহরটিই আমাদের সবচাইতে কাছে", জানান তিনি।