তিউনিসিয়ায় বিক্ষোভকারীদের ওপর ব্যাপক ধরপাকড়, গ্রেফতার প্রায় ৮০০

তিউনিসিয়ায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, কর বাড়ানো ও বেকারত্বের প্রতিবাদে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ওপর ব্যাপক ধরপাকড় চালাচ্ছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। সোমবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভে এ পর্যন্ত অন্তত প্রায় ৮০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১২ জানুয়ারি ২০১৭ শুক্রবার জেনেভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে কথা বলেন জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতরের মুখপাত্র রুপার্ট কলভিল। তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারের উচ্চ সংখ্যায় আমরা উদ্বিগ্ন। আমাদের জানামতে সোমবার থেকে ৭৭৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের এক তৃতীয়াংশের বয়স ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।’

nonameঅযৌক্তিকভাবে বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার না করতে তিউনিসিয়া সরকারের প্রতি আহ্বান জানান রুপার্ট কলভিল।

বুধবার রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে তিন শতাধিক বিক্ষোভকারীকে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খেলিফা চিবানি বলেছেন, ‘নাশকতামূলক ও ডাকাতির কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার রাতে ৩৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ বেশ কয়েকটি শহরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তবে ব্যাপক ধরপাকড়ের মধ্যেই বিক্ষোভ আরও জোরদার হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আলজেরিয়ার সীমান্তবর্তী শহর থালাতে বিক্ষোভকারীরা জাতীয় নিরাপত্তা ভবনে আগুন লাগিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে বিক্ষোভ দমনে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরে সেখানে সেনা মোতায়েন করে কর্তৃপক্ষ। সৌসি, কেবেলি ও বিজার্ট-এর মতো শহরগুলোতেও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সরকারি স্থাপনার নিরাপত্তার জন্য সেনা মোতায়েনের কথা বলা হলেও বিক্ষোভকারীরা বলছেন, বিক্ষোভ দমনেই এ ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী ইউসেফ সাহেদ দাবি করেছেন, বিরোধী দলগুলো বিক্ষোভে উসকানি দিচ্ছে।

আরব বসন্তের ঢেউ বয়ে যাওয়া দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র তিউনিসিয়াকে গণতান্ত্রিকভাবে সফল দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদিও আরব বসন্তের ঢেউয়ে পতিত স্বৈরশাসক জয়নুল আবদীন বেন আলীকে উৎখাতের পর থেকে দেশটিতে একাধিক বার সরকার বদল হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, বর্তমান সরকার বিদেশি দাতাদের সন্তুষ্ট করতে জনগণের ওপর বাড়তি করের বোঝা চাপিয়েছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও বেকারত্ব মোকাবিলায়ও তারা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স।