১২ এপ্রিল থেকে পানি সরবরাহ বন্ধের শঙ্কায় কেপ টাউন

দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউনে খরার আশঙ্কায় শহরবাসীদের পানি ব্যবহার কমিয়ে আনতে বলা হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, শহরের ৪০ লাখ মানুষ যদি পানির ব্যবহার না কমায় তবে ১২ এপ্রিল তাদের ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীণ হতে হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

5760প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই মাসের মধ্যে ব্যবহার না কমালে খরার ‍মুখে পড়তে পারে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শহর। ১২ এপ্রিল থেকে প্রতিদিন ২৫ লিটার পানির জন্য ২০০ জনের লাইনে দাঁড়াতে হতে পারে কেপটাউনবাসীদের। এদিনকে বলা হচ্ছে ‘জিরো ডে’।

শহরটিতে প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক বেড়াতে যান। তাদের জন্যও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কঠোর কিছু নীতি আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া যেই ব্যক্তি প্রতিদিন নির্ধারিত ৮৭ লিটারের বেশি পানি ব্যয় করবে তাদের জন্য শাস্তিরও বিধান করা হয়েছে।  

এরপরও কমেনি পানির অপচয়। ফলে ‘ডে জিরো’কে নয়দিন এগিয়ে এনেছে প্রশাসন। ডেপুটি মেয়র ইয়ান নেলসন বলেন, ‘পানির বাঁধে ১.৪ শতাংশ স্তর নেমে যাওয়ায় আমরা জিরো এগিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছি।’

প্রতিদিন যে হারে পানি কমছে তাতে করে খুব শিগগিরই সরবরাহ শেষ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। বলেন, ‘আমরা যদি সবাই এক হই, তাহলে এই জিরো ডে কে আরও পেছানো সম্ভব।’

জিরো ডে’তে সব বাড়িতে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। তখন স্থানীয় প্রশাসন থেকে পানি সংগ্রহ করতে হবে শহরবাসীকে।

১ ফেব্রুয়ারি পানি ব্যবহারে আরও কঠোর নিয়ম আরোপ করা হবে। ৮৭ থেকে পানির সর্বোচ্চ ব্যবহারের সীমা নামিয়ে আনা হবে ৫০ লিটারে। এর আগে পানি অপচয়কারীদের একটি তালিকা প্রকাশ করে সরকার। তাদের জরিমানাও করা হয়।

কৃষকদেরকে কৃষিকাজে পানি ব্যবহার কমিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। গাড়িওয়াশ প্রতিষ্ঠানগুলোও কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। হোটেলগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন ব্যবহার কমানো হয়। পর্যটকদেরও অনুরোধ করা হয়েছে যেন নিজেরা পানির অপচয় রোধ নিশ্চিত করেন। 

দক্ষিণ আফ্রিকার সামরিক ঘাঁটিতে পানি সংরক্ষণের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ আরও আগে বিধিনিষেধ আরোপ করতে সক্ষম হয়নি বলে চলছে সমালোচনা।  

বিশেষজ্ঞরা জানান, এই নিয়মে চলতে থাকলে খরা এড়ানো সম্ভব হবে না। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ এর বিশুদ্ধ পানি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টিন কোলভিন বলেন, ‘ডে জিরো আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে। এটা এড়ানোর একমাত্র উপায় আমাদের অভ্যাসের পরিবর্তন। তবে আমরা সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছি। এখনও অর্ধেকের বেশি মানুষ ৮৭ লিটার সীমা মানছে না।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের কাছে পানিবণ্টনের সুষ্ঠু পরিকল্পনা নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে।