ফেসবুক-গুগলে বিজ্ঞাপন বন্ধের হুমকি ইউনিলিভারের

ফেসবুক ও গুগলের মতো ডিজিটাল প্লাটফর্মগুলোকে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম বিজ্ঞাপনদাতা ও ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার। প্রতিষ্ঠানটি ফেসবুক ও গুগলের বিরুদ্ধে সমাজে বিভাজন তৈরি ও শিশুদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

20180212T112852Z_2_LYNXMPEE1B0SG_RTROPTP_3_FRANCEFOOD

সোমবার বেন অ্যান্ড জেরি’স আইসক্রিম ও ডাভ সাবানের প্রধান মার্কেটিং অফিসার কেথ ওয়েড কোম্পানির পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বক্তব্য দেন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বার্ষিক ইন্টার‌্যাকটিভ অ্যাডভারটাইজিং ব্যুরোর সম্মেলনে তিনি এ ভাষণ দেন। তবে ভাষণের আগেই তার লিখিত কপি সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আর সেখানেই বিষয়টি উঠে এসেছে।

ভাষণে ভুয়া খবর ও ‘বিষাক্ত’ অনলাইন বিষয়বস্তুর যুগে প্রযুক্তি শিল্পগুলোকে স্বচ্ছতা ও ভোক্তাদের বিশ্বাসকে আরও উন্নত করার আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয়, ‘বিশ্বস্ত বিজ্ঞাপনদাতা হিসেবে ইউনিলিভার এমন কোনও প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন দিতে চায় না যারা সমাজে ইতিবাচক অবদান রাখছে না।’

বিজ্ঞাপনে নারীদের উপস্থাপনায় ছাঁচিকরণ বন্ধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কথা জানিয়ে ইউনিলিভার বলেছে, ‘তারা শুধু সেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব রাখবে যারা আরও ভাল ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাণে কাজ করবে।’

গত বছর ফেসবুকে ডাভ সাবানের একটি বিজ্ঞাপনে বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগ উঠলে সমালোচনার মুখে পড়ে ইউনিলিভার্। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও বর্জনের আহ্বান জোরালো হয়ে উঠলে প্রতিষ্ঠানটি ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়। সে সময় তারা বলে, ‘তারা নারীদের রংয়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার বিষয়টিকে ভুল করে বাদ দিয়ে ফেলেছে।’

ওয়েড তার বক্তব্যে বলেন, ‘ভোক্তারা তৃতীয়পক্ষের যাচাই প্রক্রিয়া নিয়ে চিন্তিত নয়। তারা প্রতারণা, ভুয়া সংবাদ ও মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার প্রভাবের বিষয়ে চিন্তিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা বিজ্ঞাপনদাতার ভালো মূল্যবোধের ব্যাপারে সচেতন নয়। কিন্তু তাদের ব্র্যান্ডকে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বা শিশু নির্যাতনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে দেখলে চিন্তিত হয়।’

ইউনিলিভার ইতোমধ্যে সংস্থার সামগ্রিক খরচ কমানোর অংশ হিসেবে বিজ্ঞাপন খরচ কমিয়েছে। তারা অনেক বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কাজ করাও বন্ধ করে দিয়েছে।

ই-মার্কেটিং বিষয়ক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, ২০১৭ সালে গুগল ও ফেসবুক ডিজিটাল প্লাটফর্মে দেওয়া বিজ্ঞাপনের প্রায় অর্ধেক আয় করেছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ শতাংশ ডিজিটাল বিজ্ঞাপন দখলে রেখেছে প্রতিষ্ঠান দুটি।

তবে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের পক্ষ থেকে ইউরোপে ফেসবুক ও গুগলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য জানা যায়নি।