রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার প্রমাণিত হলে সিরিয়ায় অভিযান চালাবে ফ্রান্স

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনীর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেলে দেশটিতে সামরিক অভিযান চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ফ্রান্স। মঙ্গলবার ফরাসি প্রেসিডেন্টের দফতর ইলিসি প্যালেসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে কথা বলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আসাদ সরকারের রাসায়নিক হামলার প্রমাণ মিললে দেশটিতে সামরিক অভিযান চালাতে ফরাসি বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হবে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।

nonameবেসামরিক নাগরিকদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারকে রেড লাইন হিসেবে আখ্যায়িত করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।

ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ফ্রান্সের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো এখনও পর্যন্ত সিরিয়ায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের কোনও প্রমাণ পায়নি। তবে তারা বিষয়টির দিকে তীক্ষ্ম নজর রাখছে।

এর আগে শুক্রবার রাশিয়ার পেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক ফোনালাপে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে নিবৃত্ত করতে মস্কোর প্রতি আহ্বান জানান ফরাসি প্রেসিডেন্ট। আসাদ বাহিনীর বিমান হামলায় বিদ্রোহী অধ্যুষিত দুইটি এলাকায় প্রাণহানি ও মানবিক বিপর্যয়ের ঘটনায় আসাদকে থামাতে পুতিনের প্রতি অনুরোধ করেন ম্যাক্রোঁ।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া ও ইরানের সহযোগিতায় বিদ্রোহী অধ্যুষিত অবরুদ্ধ এলাকাগুলোতে হামলা চালাচ্ছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনী। বিদ্রোহীদের শেষ দুইটি বড় ঘাঁটি পূর্ব ঘৌটা ও ইদলিবে এসব হামলা চালানো হচ্ছে। পূর্ব ঘৌটা সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছেই অবস্থিত। ইদলিবের অবস্থান তুর্কি সীমান্তবর্তী এলাকায়।

এদিকে সংবিধান সংশোধনে জাতিসংঘের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে সিরিয়ার আসাদ সরকার। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী দামেস্কে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের কথা জানান সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এক সহকারী আয়মান সুসান। রাশিয়ায় সিরিয়ার বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে এক শান্তি আলোচনায় ওই প্রস্তাবের কথা উঠে এসেছিল।

রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ‘সিরিয়ান কংগ্রেস অব ন্যাশনাল ডায়লগ’(সোচি) সম্মেলনের প্রস্তাব ছিল, আসাদ সরকার ও আসাদ বিরোধীদের নিয়ে একটি কমিশন গঠন করা হোক; যাতে তারা একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে পারে। তবে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে আয়মান সুসান বলেন, ‘একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আমরা কারও কথা মানতে বাধ্য নই। আর সিরিয়া গঠন করেনি বা নেতৃত্ব দিচ্ছে না এমন কোনও কমিটির সঙ্গে সিরিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। নাম বা কাজ যা-ই হোক না কেন, কোনও বিদেশি পক্ষের কোনও কিছু মানতে সিরিয়া বাধ্য নয়। তারা যা-ই বলুক সেটা আমাদের ভাববার বিষয় নয়।’

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের মার্চে সিরিয়ার আসাদবিরোধী আন্দোলন গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। এতে এ পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন।