সিরিয়ার ঘৌটায় সরকারি বাহিনীর অভিযান অব্যাহত, দুইদিনে নিহত ২৫০

সিরিয়ার ইস্টার্ন ঘৌটায় দেশটির সরকারি বাহিনীর ভয়াবহ রকমের বিমান হামলা মঙ্গলবারও (২০ ফেব্রুয়ারি) অব্যাহত থেকেছে। কেবল এদিনই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। আর সবমিলে ৪৮ ঘণ্টায় নিহত বেসামরিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫০-এ। মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী ব্রিটিশ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো খবরটি জানিয়েছে।

আহতদের চিকিৎসা দিতে দুমায় একটি অস্থায হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে
ইস্টার্ন ঘৌটায় প্রায় চার লাখ মানুষের বসবাস। ২০১৩ সাল থেকে এলাকাটি বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। রাজধানী দামেস্কের কাছে অবস্থিত এটিই সর্বশেষ এলাকা যেটি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকাটির পুনদর্খল নিতে চলতি মাসের শুরুর দিকে অভিযান জোরালো করে সরকারি বাহিনী। এতে শত শত মানুষ হতাহত হয়। পরে বেসামরিকদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে এক বিরল অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয় দুই পক্ষ। কিন্তু রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে আবারও সেখানে অভিযান শুরু করে সরকারি বাহিনী। আর তা মঙ্গলবারও অব্যাহত থাকে।

সিরিয়ান অবজারভেটরিকে উদ্ধৃত করে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, মঙ্গলবার বিমান হামলায় ১০৬ জন নিহত হয়েছে। আর গত দুই দিনে যে সংখ্যক মানুষ নিহত হয়েছে তা ২০১৩ সালের রাসায়নিক হামলার পর থেকে সর্বোচ্চ প্রাণহানি। মানবাধিকারকর্মীদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘৌটায় দুইদিনে ৫০ জনেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, দুই দিনে সিরিয়ার ছয়টি হাসপাতাল হামলার শিকার হয়েছে। এতে বহু মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি তিনটি হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। তবে সিরিয়ান আমেরিকান মেডিক্যাল সোসাইটি জানিয়েছে, জাতিসংঘ চিহ্নিত ছয়টি হাসপাতাল ছাড়াও আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল হামলার শিকার হয়েছে এবং সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

স্থানীয়রা আক্ষেপ করে বলেন, এরাকায় জীবনের কোনও চিহ্ন নেই। খাদ্য ও ওষুধসহ মৌলিক নিরাপত্তাজনিত ঘাটতি রয়েছে। শামস নামের একজন আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা এমন এক পয়েন্টে আছি যেখানে এ অভিযান চলার মধ্যে ঘর থেকেও বের হতে পারছি না। সেকারণে যখনই আমরা হামলার শিকার হচ্ছি তখন একসঙ্গে অনেককে মারা যেতে হচ্ছে।’