বোকো হারামের কবল থেকে ৭৬ শিক্ষার্থী উদ্ধার, নিখোঁজ ১৩

নাইজেরিয়ার একটি স্কুলে জঙ্গি সংগঠন বোকো হারামের হামলার পর নিখোঁজ থাকা ৭৬ নারী স্কুল শিক্ষার্থীকে জীবিত উদ্ধার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। দুই শিক্ষার্থীর মরদেহও উদ্ধার করেছে তারা। এখনও নিখোঁজ রয়েছে ১৩ জন। শিক্ষার্থীদের মা-বাবা, স্থানীয় এক বাসিন্দা এবং স্থানীয় সরকারের এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবরটি জানিয়েছে।

নাইজেরিয়ার স্কুল শিক্ষার্থী
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ইয়োবের দাপচি এলাকায় হামলা চালায় বোকো হারাম। ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তারা সরাসরি স্কুলে ঢুকে যায় এবং এলাপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এদিক সেদিক ছুটোছুটি শুরু করেন। অনেকে জঙ্গলে লুকিয়ে থাকে।

 মঙ্গলবার স্কুলে রোল কল করে দেখা যায় ৯১ শিক্ষার্থী নিখোঁজ রয়েছে। বুধবার পুলিশ ও রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই শিক্ষার্থীরা অপহরণের শিকার হয়েছে কিনা সেরকম কোনও আলামত পাওয়া যায়নি। পরে ইয়োবের সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, সেনাবাহিনী বোকো হারামের কাছ থেকে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা রয়টার্সকে জানান, উদ্ধারকৃত শিক্ষার্থীরা বুধবার সন্ধ্যায় দাপচি গ্রামে ফিরে আসে। বাবাগানা উমর নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘ঈশ্বরের বন্দনা করার মধ্য দিয়ে সবাই তাদের ফিরে আসার দিনটিকে উদযাপন করছে। একমাত্র দুঃখের খবর হলো, দুই শিক্ষার্থী মারা গেছে এবং এর কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।’

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই শিক্ষার্থী কিভাবে মারা গেলো তা এখনও জানা যায়নি। যে অভিভাবক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেছেন তারাও নাম প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তারণ নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা ও সরকারি কর্মকর্তারা এ নিখোঁজের ঘটনা প্রকাশ না করতে তাদেরকে সতর্ক করেছিলেন। 

উল্লেখ্য, নাইজেরিয়ায় ২০০৯ সালে বোকো হারামের তৎপরতা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। সেই সাথে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও অন্তত ২৩ লাখ মানুষ। ২০১৪ সালে চিবুক শহর থেকে ২৭৬ জন স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে বোকো হারাম। অপহৃতদের ‘চিবুক গার্লস’ বলে ডাকা হতো। ওই অপহরণের ঘটনা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। সেই স্কুল শিক্ষার্থীদের অনেকে পালিয়ে এলেও এখনও কিছু শিক্ষার্থী নিখোঁজ রয়েছে।