সৌদি আরব ইসরায়েলকে উসকানি দিয়েছে: হামাস

ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সংগঠন হামাসকে ‘উগ্রপন্থি’ ঘোষণা করে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়েরের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে গাজা-ভিত্তিক সংগঠনটি।

5a91bf0fdda4c84d2e8b4567

শুক্রবার আদেল আল-জুবায়ের ব্রাসেলসে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে দেয়া বক্তৃতায় হামাসকে ‘উগ্রপন্থি’ উল্লেখ করে দাবি করেন, কাতার ফিলিস্তিনি এই আন্দোলনকে সমর্থন দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে গাজার সরকারি দফতরগুলো ফাতাহ আন্দোলনের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, জনমতকে বিভ্রান্ত করার পাশাপাশি ফিলিস্তিনি জনগণের ইসরায়েলবিরোধী বৈধ প্রতিরোধ সংগ্রামের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে এ বক্তব্য দিয়েছেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, এ ধরনের বক্তব্যের ফলে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর আরো বেশি অপরাধযজ্ঞ চালাতে উসকানি পাবে।

২০১৭ সালের অক্টোবরে হামাস ও ফাতাহ আন্দোলন নিজেদের মধ্যকার এক দশকের মুখোমুখি অবস্থানের অবসান ঘটাতে সম্মত হয়। কায়রোয় স্বাক্ষরিত চুক্তিতে বলা হয়, ফাতাহর নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষ জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরের পাশাপাশি গাজা উপত্যকারও নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করবে।

জুবায়ের এমন সময় এ দাবি করলেন যখন গত বছর মিশরের রাজধানী কায়রোয় ফাতাহ ও হামাসের মধ্যে স্বাক্ষরিত এক শান্তি চুক্তির আওতায় গাজার সরকারি দফতরগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে; কাতারের সমর্থন প্রত্যাহারের কারণে নয়।

২০০৬ সালের ফিলিস্তিনি পার্লামেন্ট নির্বাচনে হামাস বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার পর হামাস ও ফাতাহর মধ্যে শত্রুতা শুরু হয়েছিল। স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রধান মাহমুদ আব্বাস জননির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল হানিয়াকে অন্যায়ভাবে ক্ষমতাচ্যুত করলে ২০০৭ সালে হামাস এককভাবে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছিল।

আরববিশ্বে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর স্পষ্ট হয় ১৯৮৭ সালে। ইন্তিফাদা নামের সেই সময় শুরু হওয়া গণ-আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় পরের বছর হামাসের আত্মপ্রকাশ। ধর্মভিত্তিক সংগঠনের পরিচয়ে মুসলিম ব্রাদারহুডের সহযোগী হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে দলটির।

হামাসের প্রাথমিক ঘোষণাপত্র ছিল ইহুদিবিদ্বেষে ঠাঁসা। তবে দলটি ফিলিস্তিনিদের জাতিরাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষা জোরালো করে তুলতে শুরু করার পর সেই পরিস্থিতির সমান্তরালে বদলে যেতে থাকে হামাস। এক পর্যায়ে ফিলিস্তিনি মুক্তির সংগ্রামই হয়ে ওঠে তাদের প্রধান অঙ্গীকার।