বিমান হামলা বন্ধের সুযোগে পূর্ব ঘৌটায় ত্রাণ বহর

একরাত বিমান হামলা বন্ধ থাকার সুযোগে সিরিয়ার পূর্ব ঘৌটায় প্রবেশ করে ত্রাণবাহী ১৩টি ট্রাক। তবে তার পরপরই পূর্ব ঘৌটার দৌমা এলাকায় বিমান হামলা শুরু করেছে সরকারি বাহিনী। রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি (আইসিআরসি) শুক্রবার ওই ত্রাণ বহর পাঠায়। এর আগে অব্যাহত বিমান হামলার কারণে অবরুদ্ধ এলাকাটিতে ত্রাণ সরবরাহ বিলম্বিত হচ্ছিল। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

সিরিয়ায় রেডক্রসের ত্রাণবহরযুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস-এসওএইচআর’র আগে বলেছিল, গত ১০ দিনের মধ্যে প্রথমবারের মতো অবরুদ্ধ পূর্ব ঘৌটায় বিমান হামলা বন্ধ ছিল। শুক্রবার ত্রাণবাহী গাড়ির বহর সেখানে প্রবেশের পরই আবার বিমান হামলা শুরু হয়।

লেবাননের রাজধানী বৈরুত থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক জেইনা খোদর শুক্রবার বলেন, যে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে তাতে ওই এলাকার ৪ লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র ১২ হাজার মানুষের চাহিদা পূরণ হবে। তিনি আরও বলেন, বিমান হামলা শুরুর আগে আইসিআরসি জানিয়েছিল, আরও বড় ধরনের ত্রাণ বহর পাঠানোর জন্য তারা একটি ইতিবাচক নির্দেশনা পেয়েছে। কিন্তু তবে এর মধ্যে কোনও চিকিৎসা সরঞ্জাম ছিল না কারণ সরকার বিদ্রোহীদের চিকিৎসা করতে দিতে চায় না।

প্রায় অবিরাম বিমাল হামলা ও গোলাবর্ষণের মাধ্যমে এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে পূর্ব ঘৌটার প্রায় সব কৃষিজমি দখলে নিয়েছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী। তবে উপত্যকাটির প্রায় অর্ধেক এলাকাজুড়ে থাকা শহরগুলো এখনও বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এসওএইচআর শুক্রবার বলেছে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে হামলায় কমপক্ষে ৯৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। আর ডক্টরস উইথআউট বর্ডারের মতে, এক হাজারের বেশি মানুষ এই হামলায় নিহত হয়েছে।

এদিকে অভিযান বন্ধ করে তাদের প্রবেশে করতে দিতে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থাগুলো সিরীয় সরকার ও তার মিত্র রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। তবে দামেস্ক ও মস্কো দাবি করে আসছে, তার আগে বিদ্রোহীদের দামেস্কে গোলাবর্ষণ বন্ধ করতে হবে।

জাতিসংঘের হিসাব মতে, বিদ্রোহী অধ্যুষিত পূর্ব ঘৌটায় প্রায় ৪ লাখ মানুষ বাস করে। সিরীয় সরকার ও রুশ সামরিক বাহিনীর দাবি তারা উপত্যকাটি থেকে বের হতে বাসিন্দাদের জন্য ‘নিরাপদ পথ’ চালু করেছে। তবে এখনও সেখান থেকে কেউ বের হয়ে আসেনি। রাশিয়া ও সিরিয়ার অভিযোগ, বাসিন্দা পালিয়ে সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আসতে চাইলে বিদ্রোহীরা তাদের গুলি করছে। আর বিদ্রোহীরা অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, বাসিন্দার নির্যাতনের ভয়ে সরকারি এলাকায় যাচ্ছে না।