কঙ্গোতে অনাহারের ঝুঁকিতে ২০ লাখ শিশু: জাতিসংঘ

ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক কঙ্গোতে দুর্ভিক্ষের শিকার হয়ে অনাহারের ঝুঁকিতে ২০ লাখেরও বেশি শিশু। সময় মতো তাদের কাছে ত্রাণ না পৌঁছালে না খেয়ে থাকতে হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

4970b09c07a4446489a0cac1586f1345_18প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার প্রধান মার্ক লোকক এই পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য দাতা দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সংস্থাটির মুখপাত্র জেনস লার্কে বলেন, ডিআর কঙ্গোতে আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। এখন সেটা পালন করার সময়।

২০১৬ সালের অগাস্টে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে স্থানীয় এক নেতার মৃত্যুর পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে ১৫ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই শিশু। এখনও প্রেসিডেন্ট কাবিলার পদত্যাগের দাবিতে প্রায়ই বিক্ষোভে নামে জনগণ। সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের লড়াইয়ে মারা যায় অনেক মানুষ। ধ্বংস হয়ে যায় ফসল।

 

গত সপ্তাহেই হেমা ও লেন্দু কৃষকদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হন অন্তত ৭৯ জন। ১৯৭০ সাল থেকে এই দুই গোষ্ঠীর সংঘাত চলে আসছে।  ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে এই গোষ্ঠীগুলোর হাতে অস্ত্র চলে আসে। তারা আরও সহিংস হয়ে পড়ে। হাজার হাজার মানুষ মারা যায়। বিগত বছর গুলোতে এই সহিংসতা কমে এসেছে। তবে এই সংঘাতের কারণে কৃষিকাজ কঠিন হয়ে গেছে। অপুষ্টিতে ভুগছেন অনেকে। 

এছাড়া প্রাকৃতিক দুযোর্গ তো আছেই। চলতি বছরের শুরুতেই দেশটিতে ডি আর কঙ্গোতে বন্যায় অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরহীন হয়ে পড়েছেন পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, এই বন্যায় কলেরার ভয়াবহতা দেখা দিতে পারে। বিগত ২০ বছরে কঙ্গো এমন ভয়াবহ কলেরা দেখেনি। গত বছর জুলাইয়ে দেশটিতে কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান অন্তত ১১৯০ জন। দেশটির ২৬ প্রদেশের ২৪টিতেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে।

ইন্টারন্যাশনাল রেসক্যু কমিটি জানিয়েছে ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত ৪০০ এরও বেশি গ্রাম ধ্বংস হয়েছে সহিংসতার কারণে। প্রেসিডেন্ট কাবিলার বিরুদ্ধে আন্দোলনেও ঘটেছে সহিংসতার ঘটনা।  গত বছর সহিংসতার কারণে ঘর ছাড়তে হয়েছে ১৭ লাখ মানুষকে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার মতে, দেশটিতে ৩৯ লাখ বাস্তুহারা মানুষ রয়েছে। তাদের ৬ লাখ শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে আফ্রিকান দেশগুলোতে।