গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের নিন্দায় দক্ষিণ আফ্রিকা

ভূমি দিবসে গাজা সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ১৭ ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী নিহত হওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বুধবার (৪ এপ্রিল) দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনীর এ ধরনের কর্মকাণ্ড ফিলিস্তিনি-ইসরায়েল সংঘাতের স্থায়ী সমাধানের পরিপন্থী।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সিসুলু
৩০ মার্চ ছিল ভূমি দিবস উপলক্ষে ফিলিস্তিনিদের টানা ছয় সপ্তাহের বিক্ষোভের প্রথমদিন। এদিন গাজার ইসরায়েল সীমান্তের ছয়টি স্থানে এই বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর গুলিতে ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। ‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’ নামের এই বিক্ষোভ চলাকালে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও ১৫০০ মানুষ আহত হন। ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ আন্দোলনকে ‘সংগঠিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ আখ্যা দেয় ইসরায়েল।সহিংসতার জন্য গাজা এলাকা নিয়ন্ত্রণে নির্বাচিত সংগঠন হামাসকে দায়ী করে দেশটি। তবে এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের সংগঠনটি। 

বুধবার ইসরায়েলি বাহিনীর কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিন্ডিবে সিসুলু বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা পূর্বের দাবিকে পুনচ্চারিত করে বলতে চায়, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীকে অবশ্যই গাজা থেকে প্রত্যাহার করে নিতে হবে এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে তাদের সহিংস ও ধ্বংসাত্মক অভিযানের সমাপ্তি টানতে হবে।’

গত ৩০ মার্চ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার ঘটনায় একটি স্বাধীন তদন্ত শুরুর জন্যও ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করতে জাতিসংঘের যেসব সদস্য দেশ স্বাদীন তদন্তের দাবি তুলেছে তাদের পাশে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা।’

উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতিবছর ৩০ মার্চ ইসরায়েলের দখলদারিত্বের প্রতিবাদে ‘ভূমি দিবস’ পালন করছে ফিলিস্তিনিরা। ওইদিন নিজেদের মাতৃভূমির দখল ঠেকাতে বিক্ষোভে নামলে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে ৬ ফিলিস্তিনি নিহত হন। তাদের স্মরণেই পালিত হয় ভূমি দিবস। ২০০৭ সাল থেকে গাজা অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। সেখানকার ৭০ শতাংশ মানুষই ফিলিস্তিনের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিতাড়িত হয়ে সেখানে এসে বাস করছেন। এবছর ওই দিনটি স্মরণে বিশাল বিক্ষোভের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ মে পর্যন্ত এই বিক্ষোভ চলবে। দ্য গ্রেট রিটার্ন মার্চ’ নামে এই বিক্ষোভটি প্রতি বছর আয়োজিত হলেও এবার এতে ভিন্নতা রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েরেলের রাজধানী স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা এবারের ভূমি দিবসকে ভিন্নতা দিয়েছে।