মুখোশধারীদের হামলায় সিরিয়ায় পাঁচ হোয়াইট হেলমেট সদস্য নিহত

সিরিয়ায় সাত বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে উদ্ধার তৎপরতা চালানো বেসরকারি সংস্থা হোয়াইট হেলমেটের পাঁচ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেছে মুখোশ পরা বন্দুকধারীরা। শনিবার ভোরে আলেপ্পো প্রদেশের আল হাদের সেন্টারে সংস্থাটির কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে এসব সদস্যদের চোখ বেঁধে গুলি করে হত্যা করা হয়। এক টুইটার বার্তায় নিজেদের সদস্যদের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে হোয়াইট হেলমেট। তবে সিরিয়ায় কাজ করা আরেক বেসরকারি সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, গত কয়েকদিন ধরে ওই এলাকায় চলা ধারাবাহিক হামলার ঘটনা থেকে এই ঘটনাকে আলাদা করা যায় না।টুইটারে প্রকাশ করা নিহত হোয়াইট হেলমেট সদস্যদের ছবি
২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হোয়াইট হেলমেট নেটওয়ার্কের সদস্যরা সিরিয়ায় বিমান হামলাসহ যুদ্ধ বিধ্বস্ত এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে থাকে। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাতেই তাদের কার্যক্রম বেশি লক্ষ্য করা যায়।

শনিবার হামলার লক্ষ্যবস্তু হওয়া আল হাদের সেন্টার আলেপ্পো প্রদেশের হায়ত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অবস্থিত। সশস্ত্র এই বিদ্রোহী গ্রুপটি সিরিয়ায় আল-কায়েদা সমর্থিত গ্রুপ বলে পরিচিত।

শনিবারের হামলার বর্ণনা দিতে গিয়ে টুইটারে হোয়াইট হেলমেট লিখেছে, সুর্যোদয়ে নৃশংস নিষ্ঠুরতা। বলা হয় সশস্ত্র বন্দুকধারীদের একটি গ্রুপ গত রাতে রমজোনের সেহরির সময়ে আল হাদের হোয়াইট হেলমেট সেন্টারে হামলা চালায়।

ওই সেন্টারের পরিচালক আহমাদ আল হামিস বলেছেন, হামলাকারীরা গ্রুপের রাতের পালার সদস্যদের চোখ বেঁধে ফেলে পাঁচজনকে হত্যা করেছে। আহত হয়েছে দুইজন। আর বাকি দুইজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। হামলাকারীরা মুখোশ পরা ছিল। হামলার কিছু যন্ত্রপাতি ও জেনারেটর নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

তবে এই হামলার ঘটনা ডাকাতি নাকি গ্রুপটির ওপর লক্ষ্য করে চালানো আক্রমণ তা এখনও স্পষ্ট নয়। সিরিয়ার সাত বছরের গৃহযুদ্ধে দুইশোরও বেশি হোয়াইট হেলমেট সদস্য নিহত হয়েছে। সাধারণত তাদের সেন্টারগুলোর ওপর বোমাবর্ষণের ঘটনায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। শনিবারের মতো আক্রমনের ঘটনা বেশ নতুন।

এর আগে গত বছরের অক্টোবরে পার্শ্ববর্তী ইদলিব প্রদেশের শারমিন শহরে প্রায় একই ধরণের হামলায় সাত হোয়াইট হেলমেট সদস্য নিহত হয়।ইদলিবের বেশিরভাগ এলাকা বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএসের নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া আলেপ্পো ও পার্শ্ববর্তী হামা প্রদেশের সংলগ্ন এলাকারও নিয়ন্ত্রনও রয়েছে গোষ্ঠীটির কাছে।

গত ৪৮ ঘণ্টায় বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর মধ্যে আন্তঃসংঘর্ষে অন্তত ২০ বিদ্রোহীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সিরিয়ান অবজারভেটরী ফর হিউম্যান রাইটস। এই ঘটনায় উত্তেজনার মধ্যেই সেখানে হামলার ঘটনা ঘটলো। অবজারভেটরি প্রধান রামি আবদের রহমান বলেন, আল হাদেরের ঘটনাকে এইচটিএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা অন্য হামলার ঘটনা থেকে আলাদা করা যাবে না।