ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস

বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। বুধবার (১৩ জুন) আলজেরিয়া, তুরস্ক ও ফিলিস্তিন  প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিল। প্রস্তাবে অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের জন্য একটি ‘আন্তর্জাতিক সুরক্ষা ব্যবস্থা’র সুপারিশ করতে জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেসের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ
চলতি মাসের শুরুতে নিরাপত্তা পরিষদে কুয়েত ফিলিস্তিনিদের ন্যূনতম সুরক্ষার প্রশ্নকে সামনে এনে একটি খসড়া প্রস্তাব হাজির করেছিল। সেই প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেওয়ার পর বুধবার (১৩ জুন) সাধারণ পরিষদে একই ধরনের একটি প্রস্তাব তোলা হয়। এদিন সাধারণ পরিষদে ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১২০টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে অবস্থান নেয়। বিপক্ষে ভোট পড়ে ৮টি। আর ৪৫টি দেশ ভোটদান থেকে বিরত ছিল।

সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবে উঠে এসেছে ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তা, সুরক্ষা এবং তাদের কল্যাণ নিশ্চিতের উপায় আর আন্তর্জাতিক সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রশ্ন। ৬০ দিনের মধ্যে এসব বিষয় মীমাংসার উপায় খুঁজে বের করতে জাতিসংঘ মহাসচিব গুয়েতেরেসের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রস্তাবে গাজা থেকে ইসরায়েলি বেসামরিক এলাকা লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালানোর নিন্দা জানানো হয়।

ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। এই দুই মিত্র দেশ, আনীত প্রস্তাবে ‘হামাসের সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ নেই’ অভিযোগ তুলে একে একপেশে আখ্যা দিয়েছে। জাতিসংঘের ইসরায়েলি দূত ড্যানি ড্যাননের দাবি, এই প্রস্তাবে সমর্থন দেওয়ার মানে হলো একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন দেওয়া, তাদের ক্ষমতায়ন করা।

এর আগে গত ১ জুন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে কুয়েতের খসড়াকৃত একটি প্রস্তাবে ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ওই প্রস্তাবে ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনগণের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনের নিন্দা জানানো হয়েছিল। সেই প্রস্তাবটিকেও একপেশে আখ্যা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এবারের মতোই বলা হয়েছিল, প্রস্তাবটি সাম্প্রতিক সহিংসতার জন্য হামাসকে দায়ী করতে ব্যর্থ হয়েছে।

ভোটাভুটির আগে জাতিসংঘের মার্কিন দূত নিকি হ্যালি বলেন, ‘গাজার মানুষের ভয়াবহ জীবনযাত্রার জন্য প্রধান দায়টা সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের।’ নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি সদস্য দেশের মধ্যে ফ্রান্সসহ ১০টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে শুধু যুক্তরাষ্ট্র। আর ভোটদানে বিরত ছিল চারটি দেশ। 

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৩০ মার্চ ভূমি দিবসের বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ১২০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে ১৪ মে। ফিলিস্তিনিদের ‘গ্রেট রিটার্স মার্চ’র বিক্ষোভ কমর্সূচি চলমান থাকা অবস্থায় এদিন ইসরায়েলের মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়া হয়। এর বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিরা তাদের বিক্ষোভ জোরালো করলে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের উপর হামলা চালায়।