তুরস্কের প্রথম নির্বাহী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন এরদোয়ান

তুরস্কের প্রথম নির্বাহী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। গত মাসে নির্বাচনে জয়লাভের পর সোমবার নতুন মেয়াদে শপথ নেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। আঙ্কারার পার্লামেন্ট ভবনে এই শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে তুরস্ক নতুন সংসদীয় ব্যবস্থায় প্রবেশ করলো। গত বছর সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে এই নতুন ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান

প্রেসিডেন্ট ভবনে অনুষ্ঠিত এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ, ভেনুজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ও কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানিসহ বেশ কিছু বিদেশি নেতা ও রাষ্ট্রপ্রধান উপস্থিত ছিলেন।  

নতুন ব্যবস্থায় ৬৪ বছর বয়সী এরদোয়ান দেশের নির্বাহী বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। এখন থেকে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট নিয়োগ ও বহিস্কার করার ক্ষমতা পাবেন। প্রধানমন্ত্রীর পদ বাদ দিয়ে নতুন ব্যবস্থায় ভাইস প্রেসিডেন্ট রাখা হয়েছে। এছাড়া সংসদের অনুমতি ছাড়াই তিনি মন্ত্রিসভার সদস্য, শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ বিচারপতি নিয়োগ দিতে পারবেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এখন সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাহী আদেশ  ও জরুরি অবস্থাও জারি করার ক্ষমতার অধিকারী।

সোমবার শপথ গ্রহণের পর বিকালে নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করবেন এরদোয়ান। এর আগে তিনি বলেছেন, নতুন মন্ত্রিসভায় তার দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি-একে পার্টির কোনও সদস্য থাকবে না। তিনি সাবেক রাজনীতিক ও কূটনীতিকদের মাধ্যমে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

এরদোয়ানের দল একে পার্টি গত ২৪ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৪২.৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে। তাদের জোটের শরীক দল ন্যাশনাল মুভমেন্ট পার্টি-এমএইচপি পেয়েছে ১১.১ শতাংশ ভোট। এই দুই দল মিলে সংসদে কোনও রকমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। একই দিন অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৫২.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে দেশের প্রথম নির্বাহী প্রেসিডেন্ট হন এরদোয়ান।

২০০৩ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিন মেয়াদে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এরদোয়ান। ২০১৪ সালেই তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এর আগে ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ইস্তাম্বুলের মেয়র ছিলেন। তার প্রধান সমর্থক হচ্ছেন রক্ষণশীল এবং ধার্মিক অপেক্ষাকৃত বয়স্ক তুর্কিরা। ২০১৬ সালের এক 'ব্যর্থ গণঅভ্যুত্থানের' পর ২০১৭ সালে এক গণভোটে সামান্য ব্যবধানে জয়লাভ করেন এরদোয়ান। এতে তিনি দেশটিকে সংসদীয় ব্যবস্থা থেকে প্রেসিডেন্ট শাসিত ব্যবস্থার দিকে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে জনরায় পান। গত ২৪ জুনের নির্বাচনেও জয় পান এরদোয়ান। এর মধ্য দিয়ে নির্বাহী ক্ষমতা পাচ্ছেন তিনি।