শতাব্দীর দীর্ঘতম রক্তিম চাঁদ দেখল বিশ্ববাসী

শতাব্দীর দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণের সাক্ষী হলো বিশ্ববাসী। ১ ঘণ্টা ৪৩ মিনিটের মহাজাগতিক এই গ্রহণ প্রত্যক্ষ করেছে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো। শতাব্দীর দীর্ঘতম পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের কারণে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ একদিকে রক্তিম হয়ে উঠেছিল। অন্যদিকে তাকে সঙ্গ দিতে একপর্যায়ে হাজির হয় সৌরজগতের লাল গ্রহ মঙ্গল।
noname

সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে একই সরলরেখায় চলে এলে গ্রহণ হয়। সে সময় পৃথিবী যদি চাঁদ ও সূর্যের মধ্যিখানে থাকে, তখন চাঁদ পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়ে যায়। এই বাস্তবতাকেই চন্দ্রগ্রহণ বলা হয়। চাঁদের ওপর পৃথিবীর ছায়া পড়লে গ্রহণ হয়, তবে চাদ তথনও পুরোপুরি অন্ধকারে ঢেকে যায় না। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে তখনও চাঁদের ওপর সূর্যের কিছুটা আলো পড়ে। এ ক্ষেত্রে বায়ুমণ্ডলে সূর্যের বেশির ভাগ আলো প্রতিফলিত বা শোষিত হলেও লাল রঙের আলো ঠিকই পৌঁছে যায় চাঁদে। ফলে এটি রক্তাভ হয়ে ওঠে। গতকাল রাতে ঠিক এই ঘটনাই ঘটেছে, আর সেজন্যই ব্লাড মুন দেখা গেছে।

ইউরোপ, রাশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকাসহ এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার একাংশে এই গ্রহণ দেখা গেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার আটলান্টিক উপকূল থেকে মধ্যপ্রাচ্য, রাশিয়ার ক্রেমলিন থেকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি হার্বারের লাখ লাখ মানুষ এই চন্দ্রগ্রহণ উপভোগ করেছে। তবে উত্তর আমেরিকায় এই গ্রহণ দেখা যায়নি।

নাসা জানিয়েছে, বুধবারের গ্রহণ স্থায়ী হয়েছিল ১ ঘণ্টা ৪২ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড। কোথাও কোথাও তা প্রায় ৪ ঘণ্টাও স্থায়ী হয়। নাসা আভাস দিয়েছে, সূর্যের পুরো আলোই মঙ্গলে পড়ায় জুলাইয়ের ২৭-৩১ তারিখ পর্যন্ত মঙ্গলগ্রহ সম্পূর্ণ দৃশ্যমান থাকবে। আর পৃথিবী থেকে তা পরিষ্কার দেখা যাবে। ৩১ জুলাই মঙ্গল থেকে পৃথিবীর দূরত্ব থাকবে ৩৫.৮ মিলিয়ন মাইল।

মঙ্গল এবং সূর্যের অবস্থান মহাকাশে ঠিক বিপরীত স্থানে রয়েছে। তাই ওই সময়টায় সূর্যের পুরো আলো পাবে মঙ্গল গ্রহ। এর আগে ২০০৩ সালে মঙ্গল পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে এসেছিল।