যুক্তরাজ্যের দুই মসজিদে বিদ্বেষী হামলা, নামাজরতদের ওপর পাথর নিক্ষেপ

আবারও হামলার শিকার হলো যুক্তরাজ্যের মুসলিমরা। বার্মিংহ্যামের দুই মসজিদে মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা যখন নামাজ আদায় করছিলেন, সে সময় সেখানে গুলতি দিয়ে পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছে। এতে ভেঙে গেছে জানালার কাঁচ। নিরাপত্তার জন্য মসজিদের সামনে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে  এসব কথা জানা গেছে। এক ব্রিটিশ পর্যবেক্ষক সংস্থার পক্ষ থেকে একে 'বিদ্বেষী হামলা' আখ্যা দেওয়া হয়েছে। 

c36fe892c2884ec1a2e715a703706776_18

প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার মাগরিবের নামাজের সময় এই হামলা চালানো হয়। দেশটির মুসলিম সংগঠনগুলো এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এই ঘটনার পর মসজিদের সামনে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, তারা এই হামলার তদন্ত শুরু করেছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। একে ‘হেট ক্রাইম’ বলে অভিহিত করা হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের অলাভজনক সুফি মুসলিম সংগঠন বাহু ট্রাস্ট দাবি করেছে, ‘আমরা এখনও এই হামলার উদ্দেশ্য জানি না। পাথরের আকারগুলো মার্বেলের মতো। এতে মানুষের মৃত্যুও হতে পারতো।

একদিন আগেই বার্মিংহামে পার্লামেন্টের সামনে এক গাড়ি হামলাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বিবেচনা করে চালককে আটক করা হয়েছে। আল হিজরা মসজিদে হামলার সময় নামাজ পড়ছিলেন নাভিদ সাদিক। তিনি মনে করেন, পার্লামেন্ট ভবনের সামনের ঘটনার ওপর ভিত্তি করেই কেউ মসজিদে হামলা চালিয়ে থাকতে পারে। 

বিদ্বেষী হামলা পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত ব্রিটিশ সংগঠন টেল মামা ইউকে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। গত মাসে সংগঠনটির পর্যবেক্ষণে ব্রিটেনসহ বিশ্বজুড়ে ইসলামবিদ্বেষ ও সেই বিদ্বেষপ্রসূত হামলা বৃদ্ধির পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছিল। সংস্থাটি জানিয়েছিল, ২০১৭ সালে ম্যানচেস্টারে আরিয়ানা গ্রান্দের কনসার্টে হামলার পর মুসলিম বিদ্বেষী হামলা বেড়েছে প্রায় ৭০০ শতাংশ। ২০১৭ সালে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিলো, সেবছর নথিভুক্ত হওয়া বিদ্বেষী হামলার পরিমাণ আগের চেয়ে ২৯ শতাংশ বেশি। বিদ্বেষী এইসব হামলার অধিকাংশেরই উৎস মূলত জাতিগত ঘৃণা  বা বিদ্বেষ।

২০১৬-১৭ সালে যুক্তরাজ্যে সংঘটিত ৮০ হাজার ৩৯৩টি বিদ্বেষী হামলার নথি রয়েছে সরকারের কাছে। ২০১৫-১৬ সালে এ সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৫১৮। ২০১১-১২ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে বিদ্বেষী হামলা সংক্রান্ত নথি নিবন্ধন  শুরু হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে বিদ্বেষী হামলা বৃদ্ধির হার এটাই সর্বোচ্চ।