ভেনেজুয়েলান সীমান্তে সেনা মোতায়েন ব্রাজিলের, জরুরি অবস্থা জারি পেরুর

ভেনেজুয়েলান সীমান্তবর্তী শহরে সেনা মোতায়েন করছে ব্রাজিল। দেশটির সরকারের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাদের মোতায়েন করা হচ্ছে। চলতি মাসের শুরুতেই স্থানীয়রা ভেনেজুয়েলান অভিবাসীদের ওপর হামলা চালালে এই সিদ্ধান্ত নেয় ব্রাজিল সরকার। অন্যদিকে পেরুও তাদের সীমান্তবর্তী দুই প্রদেশে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে।

ভেনেজুয়েলান সীমান্তে সেনা মোতায়েন ব্রাজিলের

খাবার আর ওষুধ সংকটের কারণে হাজার হাজার ভেনেজুয়েলার নাগরিক দেশ ত্যাগের মধ্যে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করে তাদের প্রতিবেশী দেশ ব্রাজিল ও পেরু। বিপর্যস্ত অর্থনীতির কারণে ২০১৪ সাল থেকে ২০ লাখেরও বেশি ভেনেজুয়েলার বাসিন্দা দেশ ছেড়েছে। প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেওয়া এসব নাগরিককে নিয়ে আঞ্চলিক উত্তেজনাও দেখা দিয়েছে।

ব্রাজিলে চলতি মাসের হামলঅকে কেন্দ্র করে রোরাইমাতে সেনা মোতায়েন নিয়ে একটি ডিক্রিতে সই করেছেন প্রেসিডেন্ট মিশেল তিমের। তিনি বলেন, অভিবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে পেরুতে সীমান্তবর্তী দুই প্রদেশের ৬০ দিনের স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। দেশটির সরকার জানায়, স্বাস্থ্য ও পয়ঃনিষ্কাশন ঝুঁকির মুখে রয়েছে। তবে বিস্তারিকত কিছু জানায়নি তারা। পেরুর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলো যে অভিবাসীদের কাছ থেকে ম্যালেরিয়া ও বসন্ত রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ভেনেজুয়েলায় সৃষ্ট এই অভিবাসী সংকটের জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে দায়ী করেছেন তেমের। তিনি বলেন, ভেনেজুয়েলার সংকট আর এখন অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সীমাবদ্ধ নেই। এটা এখন পুরো মহাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে সংকট নিরসনে পেরু, কলম্বিয়া ও ব্রাজিরের অভিবাসন কর্মকর্তারা কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতায় এক বৈঠক বসেছেন।

কলম্বিয়ায় এখন প্রায় ১০ লাখ ভেনেজুয়েলান অভিবাসী বাস করে আর পেরুতে ৪ লাখের বেশি। দেশ দুইটি জানায় তারা অভিবাসীদের নিয়ে তথ্য সরবরাহ করবে।

মাদুরো অবশ্যই তার দেশের নাগরিকদের ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। মঙ্গলবার সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ‘নির্মম পরিস্থিতিতে’ থাকা ৮৯ জন নাগরিক ইতোমধ্যে দেশে ফিরে এসেছে। মাদুরো বলেন, তারা পেরুতে বর্ণমাদ ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে। ভেনেজুয়েলানদের দেশে ফিরে আসা উচিত।

তেল উৎপাদনকারী পশ্চিম গোলার্ধের দেশগুলোর মধ্যে ভেনেজুয়েলার মজুতই সবচেয়ে বেশি। তারপরও দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ এখন বিশ্বের সর্বোচ্চ। দেশটিতে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধের চরম সংকট চলছে। অনেক নাগরিকই অনাহারে থাকার কথা জানিয়েছেন। ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক অবস্থাও অস্থির। বিরোধীরা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের জন্য সমাজতন্ত্রী দলের শাসনকে দায়ী করেছেন। গত বছর সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিহত হয়েছে বহু বিরোধী দলীয় সমর্থক। বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে বিরোধীরা প্রচারণা চালালেও মে মাসের নির্বাচনে আবার জিতেছেন তিনি। আর তাকে লক্ষ্য করে ড্রোনবাহিত বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটার পর দেশটির রাজনৈতিক অবস্থা আরও অস্থির হয়ে উঠে।