চিলিকে সমঝোতায় বাধ্য করতে পারবে না বলিভিয়া: আইসিজে

প্রশান্ত মহাসাগরে সার্বভৌম প্রবেশাধিকার দিতে চিলিকে বাধ্য করতে পারবে না স্থলবেষ্টিত বলিভিয়া। সোমবার বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসের উপস্থিতিতেই এমন রায় ঘোষণা করেছে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস-আইসিজে বা ওয়ার্ল্ড কোর্ট।

আইসিজে`র রায় ঘোষণার সময় বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস

প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধের পর ১৯০৪ সালে বলিভিয়া তাদের বেশিরভাগ উপকূলীয় এলাকা চিলির কাছে সমর্পণ করে। আন্দিজ অঞ্চলের প্রতিবেশি দেশ দুটি তারপর বিভিন্ন সময় প্রশান্ত মহাসাগরে বলিভিয়ার জন্য একটি করিডোর চালুর বিষয়ে আলোচনা করেছে। তবে আইসিজে’র বিচারকরা এমন সমঝোতার জন্য চিলির জন্য কোনও বাধ্যবাধকতা দেননি।

বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট মোরালেস আদালতের রায় ঘোষণার অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন। আশা করা হয়েছিল হেগের পিস প্যালেস অবস্থিত আদালতের বাইরে  তিনি সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য দেবেন। মোরালেস মনযোগ দিতে রায় শোনেন ও নোট নেন। ওই সময় বিচারক দাবির সপক্ষে বলিভিয়ার আইনজীবীদের উত্থাপিত ৮টি যুক্তিই বাতিল করে দেন। তবে রায়ে বলিভিয়ার সঙ্গে চিলির আলোচনায় কোনও বাধাও দেওয়া হয়নি।

বিচারক প্যানেলে ১২-৩ ভোটে পাস করা সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে রায় পড়ে শোনান বিচারক আব্দুল কাবি ইউসুফ। তিনি বলেন, দেশ দুটির আলোচনার দীর্ঘ ইতিহাস থাকলেও চিলি কখনও নিজেকে সমঝোতায় বাধ্য করেনি। এমন কোনও চুক্তি করেনি যার মাধ্যমে তারা বলিভিয়ার দাবি মতো নিজেদের রাজ্য হস্তান্তর করবে।

বিচারক বলেন, ‘আদালত এমন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি যে, প্রশান্ত মহাসাগরে বলিভিয়ার পূর্ণ সার্বভৌম প্রবেশাধিকারের বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছানোর ব্যাপারে চিলির কোনও বাধ্যবাধকতা আছে।’

 রায় ঘোষণা সরাসরি টেলিভিশনে দেখেন চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্টেইন পিনেরা

চিলি বর্তমানে পেরু সীমান্তের কাছের আরিকা বন্দরে বলিভিয়ার শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়ে রেখেছে। তবে বলিভিয়া একটি ট্রেন সংযোগ ও নিজের নিয়ন্ত্রণে একটি বন্দরসহ একটি করিডোরের দাবি করে আসছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট মোরালেস তাদের দাবিকে শক্তিশালী করতে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের জন্য মামলা করেন। এজন্য ২০১২ সালে তিনি চিলির সঙ্গে আলোচনাও বন্ধ করে দেন। তবে রায়ে তার সেই আশা পূরণ হয়নি।

বিচারক আব্দুল কাবি ইউসুফ বলিভিয়ার স্থলবেষ্টিত অবস্থার কারণে উদ্ভুত সমস্যা সমাধানের জন্য দুই দেশকে উদ্বুদ্ধ করেন। আর এটা তারা নিজেরদ পারস্পারিক স্বার্থকে সমুন্নত রেখেই করবে।

আইসিজে জাতিসংঘের নির্ধারিত একটি আদালত। এখানে বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ের সমাধান করার জন্য বিভিন্ন দেশ হাজির হয়ে থাকে।