খাশোগি হত্যায় সন্দেহভাজন ১৫ জনকে ফেরত চায় তুরস্ক

সাংবাদিক জামাল খাশোগির মৃত্যু নিয়ে রিয়াদের ব্যাখ্যায় ক্ষুব্ধ তুরস্ক এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা সত্য প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের ঘনিষ্ঠ সূত্র মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডলইস্ট আইকে বলেছেন, তুরস্কের নেতা এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রকাশ্যে আসা সত্যের নেপথ্যে থাকা সবকিছু খুঁটিয়ে দেখতে চান। সূত্রটি বলছে, আঙ্কারার প্রবল আশঙ্কা খাশোগি হত্যায় সন্দেহভাজন ১৫ জনকে গ্রেফতার করে তুরস্কের তদন্তকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের আগেই তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবে সৌদি আরব। এই ঘটনায় সন্দেহভাজন ১৮ জনকে হেফাজতে নেওয়ার কথা এরইমধ্যে জানিয়েছেন সৌদি আরবের অ্যাটর্নি জেনারেল। তুর্কি সূত্রের বরাত দিয়ে মিডলইস্ট আই জানিয়েছে, তাদের তদন্তে সন্দেহভাজন ১৫ অভিযুক্তকে ফেরত চায় তুরস্ক।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান
গত শুক্রবার মধ্যরাতে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো স্বীকার করা হয় গত ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের কনস্যুলেটে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে খুন হন সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি। তবে তুরস্কের কর্তৃপক্ষ সৌদি আরবের এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয়। উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র মিডলইস্ট আইকে বলেছে, তারা এমন সব শক্ত ও বিপুল প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন, যাতে দেখা যায় খাশোগি পূর্বনির্ধারিত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। এর আগে তুর্কি কর্তৃপক্ষ সংবাদমাধ্যমটিকে জানায়, খাশোগিকে নির্যাতন, হত্যা এবং টুকরো টুকরো করে ফেলার প্রমাণ রয়েছে তাদের কাছে। ১৫ সদস্যের একটি হিট স্কোয়াড টিম এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। খাশোগিকে মারতে সময় লেগেছিল মাত্র সাত মিনিট।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কঠোর সমালোচক খাশোগি গত ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের কনস্যুলেটে যাওয়ার পর নিখোঁজ হন। তখন থেকেই সৌদি আরব দাবি করে আসছিল তিনি ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেট থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন। শনিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রথমবারের মতো দেশটি স্বীকার করে খাশোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িত দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে বহিষ্কারের কথাও জানায় দেশটি। দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, এই ঘটনায় সন্দেহভাজন ১৮ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

তবে সৌদি আরবের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন তুর্কি কর্তৃপক্ষ ছাড়াও বেশিরভাগ দেশ। শনিবার তুরস্কের ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির মুখপাত্র ওমর সেলিক রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে বলেছেন, ‘যা কিছুই ঘটে থাকুক তুরস্ক তা প্রকাশ করবে। এ নিয়ে কারোরই কোনও সন্দেহ নেই’।