খাশোগি সেজে কনস্যুলেট ভবন থেকে বের হয়েছিলেন সৌদি কর্মকর্তা!

অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও সৌদি ভিন্নমতাবলম্বী জামাল খাশোগি নিখোঁজের পর থেকে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে রিয়াদ দাবি করে আসছিলো, তিনি কনস্যুলেট ভবন থেকে বের হয়ে গেছেন। তবে দেশটির পক্ষ থেকে তাদের ইস্তানবুল দূতাবাসেই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার কথা স্বীকার করার পর এবার সে দেশের এক কর্মকর্তা ভয়াবহ তথ্য দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে দাবি করলেন, খাশোগিকে হত্যার পর তারই পোশাক পরে তুরস্কের ইস্তানবুলস্থ সৌদি কনস্যুলেট থেকে বের হয়েছিলেন এক সৌদি কর্মকর্তা। খাশোগিই কনস্যুলেট থেকে বের হয়ে গেছেন-এমনটা বোঝাতেই এই প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছিল।

ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেট
২ অক্টোবর ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন সৌদি অনুসন্ধানী সাংবাদিক জামাল খাশোগি। শুরুতে সৌদি আরব দাবি করেছিল, তিনি ভবন থেকে জীবিত বের হয়ে গেছেন। তুরস্ক দাবি করে, ১৫ সদস্যের একটি গোয়েন্দা স্কোয়াড কনস্যুলেটের ভেতরেই খাশোগিকে হত্যা করেছে। সৌদি আরব এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসলেও শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) মধ্যরাতে প্রথমবারের মতো তারা খাশোগি নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করে। তবে সৌদি আরবের দাবি, খাশোগিকে হত্যার উদ্দেশ্য তাদের ছিল না। খাশোগি কনস্যুলেটে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন এবং ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তার মৃত্যু হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, হত্যাকাণ্ডের পর নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে সৌদি স্কোয়াড প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। ওইদিন মুস্তফা মাদানি নামে স্কোয়াডের এক সদস্য খাশোগির কাপড়, চশমা, অ্যাপল ঘড়ি পরে কনস্যুলেট ভবনের পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে যান। খাশোগিই ভবন থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন-এমনটা দেখানোর প্রচেষ্টা হিসেবে এ কাজটি করেন তিনি। এরপর মাদানি সুলতানাহমেত এলাকায় গিয়ে সেইসব পরিধেয় বস্তু ত্যাগ করেন।

খাশোগি নিখোঁজ হওয়ার কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সৌদি আরব এ ব্যাপারে জানার কথা অস্বীকার করে আসছিলো। তারা দাবি করছিলো, কনস্যুলেট থেকে সেদিন বের হয়ে গেছেন খাশোগি। তবে খাশোগির কনস্যুলেট থেকে বের হয়ে যাওয়ার কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করতে সমর্থ হয়নি সৌদি কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে তাদের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ জোরদার হতে থাকে। আগামী ২৩-২৫ অক্টোবর সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য বিনিয়োগ সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দেয় বেশ কিছু দেশ ও বড় বড় প্রতিষ্ঠান।