বিদ্রোহী গোষ্ঠী ওএনএলএফ’র সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছে ইথিওপিয়া

হর্ন অব আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার সোমালি অঞ্চলের বিদ্রোহী গোষ্ঠী ওগাডেন ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট-ওএনএলএফ’র সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছে দেশটির সরকার। রবিবার (২১ অক্টোবর) গ্যাস সমৃদ্ধ অঞ্চলটির এই বিদ্রোহীদের সঙ্গে শান্তিচুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। আগে ওএনএফএল’কে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করে আসছিল ইথিওপিয়া। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

শান্তি চুক্তি অনুষ্ঠানে ইথিওপিয়ার সরকার ও বিদ্রোহী পক্ষের নেতারা

১৯৮৪ সালে ইথিওপিয়ার সোমালি অঞ্চল বা ওগাডেনের স্বাধীনতার দাবিতে প্রতিষ্ঠিত হয় ওএনএলএফ। ২০০৭ সালে চীনা পরিচালিত একটি তেলের কারখানায় এক হামলায় ৭৪ জন নিহত হওয়ার পর সরকার তাদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করে। তবে এই বছর প্রধানমন্ত্রী আবিই আহমেদের নেতৃত্বাধীন পার্লামেন্ট সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ওএনএলএফ’কে নিষিদ্ধ তালিকা থেকে বাদ দেয়। আর গত আগস্ট ওএনএলএফ অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করে।

চুক্তিতে বলা হয়েছে, দুই পক্ষই নিজেদের মধ্যে শত্রুতা বাদ দেবে আর ওএনএলএফ ‘শান্তিপূর্ণ উপায়ে তাদের রাজনৈতিক মর্যাদা অর্জন করবে’। চুক্তিতে আরও বলা হয়, এই সংঘাতের মূল কারণ নিয়ে আলোচনার জন্য দুই পক্ষ মিলে একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে।

সরকার বলছে, ওগাডেন অঞ্চলটিতে চার লাখ কোটি কিউবিক ফিট গ্যাস ও তেলের মজুত রয়েছে। সেখানে চীনের পলি-জিসিএল পেট্রোলিয়াম কোম্পানি ২০১৩ সালে দুটি গ্যাস ক্ষেত্রের খনন কাজ শুরু করেছে।

গত এপ্রিল মাসে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া আবিই আহমেদ কয়েক দশক ধরে অস্থিতিশীল থাকা দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি দেশটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক নিপীড়নের বিষয়টি স্বীকার করে তার নিন্দা জানান। এই পরিস্থিতিকে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস’র সঙ্গে তুলনা করেন তিনি। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি প্রতিবেশি দেশ ইরিত্রেয়ার সঙ্গেও শান্তি স্থাপনের জন্য কাজ করছেন। দেশটির সঙ্গে ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সীমান্ত যুদ্ধে লিপ্ত ছিল ইথিওপিয়া। ধারণা করা হয়, ওই যুদ্ধে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ নিহত হয়।