হাইতির ১৭৬ অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে চিলি

ধারাবাহিক ফ্লাইটের অধীনে বুধবার প্রথমবারের মতো হাইতির ১৭৬ অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে চিলি। কর্তৃপক্ষ একে ‘মানবিক ফ্লাইট’ বললেও অভিবাসীদের গ্রুপগুলো একে ‘জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন’ আখ্যা দিয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিমানবন্দগামী গাড়িতে চড়তে সান্তিয়াগোর একটি স্পোর্টস সেন্টারে জড়ো হয় ১৭৬ অভিবাসী। আর তাদেরকে হাইতির রাজধানী পোর্ট অ-প্রিন্স নিয়ে যায় চিলির বিমান বাহিনীর একটি ফ্লাইট।চিলি থেকে ফেরত আসা হাইতির নাগরিকেরা
প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তার অভাবের দেশ হাইতি এখনও বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ। গত দুই বছরে হাইতির প্রায় দেড় লাখ মানুষ অভিবাসন নিয়েছে বলে দাবি লাতিন আমেরিকার অন্যতম ধনী অর্থনীতির দেশ চিলির। সম্প্রতি ডানপন্থী সরকারের প্রেসিডেন্ট সিবাস্তিয়ান পিনেরা দেশের অভিবাসীর সংখ্যা কমানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। ফিরতে চেয়ে নিবন্ধন করতে হলে অভিবাসীদের একটি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে হচ্ছে। এতে বলা আছে নয় বছরের মধ্যে আর চিলিতে ফেরত আসবেন না আর পরিবারের ঘনিষ্ঠ একজনকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন তিনি।

দেশটির সরকার বলছে, অভিবাসীর সংখ্যা কমাতে তাদেরকেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে যারা এখানে কাজ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টায় আছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এসব মানুষ পাচারকারীদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে লুব্ধ হয়েছে। চিলির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাইতি ফেরত যেতে মোট এক হাজার ৩৭ জন নিবন্ধন করেছেন।  

তবে চিলির নতুন এই নীতি নিয়ে চলছে সমালোচনাও। চিলিতে ৩০টি আলাদা শরণার্থী গ্রুপের প্রতিনিধিত্ব করে দ্য ন্যাশনাল প্লাটফর্ম অব হাইতিয়ান অর্গানাইজেশন। বুধবার এক বিবৃতিতে গ্রুপটি বলেছে, এসব ফ্লাইটে মানুষদের জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন করা হচ্ছে। চিলির সরকার ‘বর্ণবাদী  নীতি’ নিয়েছে বলেও অভিযোগ করে গ্রুপটি।

তবে বর্ণবাদ ও জোরপূর্বক প্রত্যাবাসনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে চিলির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা বলছে, জাতিসংঘের সমর্থনে স্বেচ্ছায় ফিরতে চাওয়ায় সহায়তা করছেন তারা। বুধবার বিমানবন্দরে চিলির সরকারি কর্মকর্তা রদ্রিগো উবিল্লা সাংবাদিকদের বলেন, কলম্বিয়ার অভিবাসীরাও একই ধরণের সেবার অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এসব মানুষ আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুরোধ করেছেন কারণ তারা আমাদের দেশে নতুন জীবন খুঁজে পাওয়ার স্বপ্ন পূরণে সক্ষম হয়েছেন তারা।

স্পোর্টস সেন্টারে অপেক্ষারত অভিবাসীরা সাংবাদিকদের বলেছেন, তারা চিলিতে বেকারত্ব, ক্ষুধা ও বর্ণবাদের মুখোমুখি হয়েছেন। জিন বাপতিস্তা ব্রিগনল জানান, ভিসা থাকা সত্ত্বেও কাজ খুঁজে পাননি তিনি। এখানকার কোম্পানিগুলোর বসেরা চায় না হাইতির নাগরিকেরা তাদের হয়ে কাজ করুক। তারা চামড়ার রং পছন্দ করে না। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পিনেরা আমাদের ওপর দয়া দেখিয়েছেন আর আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ’।