#মিটু আন্দোলন ভুলভাবে পুরুষের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে: প্রতিষ্ঠাতা তারানা

বিশ্বব্যাপী সাড়া ফেলে দেওয়া নারীদের যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে শুরু হওয়া #মিটু আন্দোলন এখন ভুলভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আন্দোলনটির প্রতিষ্ঠাতা তারানা বার্ক। তিনি বলেছেন, যে আন্দোলন তিনি শুরু করেছিলেন সেটাই এখন তার কাছে অচেনা। এখন পুরুষের বিরুদ্ধে ভুলভাবে ও প্রতিহিংসামূলক ষড়যন্ত্র চরিতার্থ করতে এই আন্দোলন ব্যবহার হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার পাম স্প্রিংয়ে এক নারী সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এখবর জানিয়েছে।#মিটু আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা তারানা বার্ক
আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক তারানা বার্ক ২০০৬ সালে নিজের সম্প্রদায়ে যৌন হয়রানির শিকার হওয়াদের সমর্থনে শুরু করেছিলেন এই প্রচারণা। গত বছর হলিউড মোগল হার্বে ওয়েনস্টিনের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এই আন্দোলন। প্রতিবেশী ভারত হয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে এই আন্দোলন। দীর্ঘদিনের নীরবতা ভেঙে বাংলাদেশের কয়েকজন নারীও তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া হয়রানির ঘটনা সামনে এনেছেন। তবে বিশ্বের নানাপ্রান্তে অভিযুক্ত অনেকেই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার দাবি করেছেন। এমন বাস্তবতাতেই এই আন্দোলনকে পুরুষের বিরুদ্ধে ব্যবহারের অভিযোগ করলেন তারানা বার্ক।

তারানা বার্ক বলেন, সংবাদমাধ্যম এই আন্দোলনকে শত্রুর বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে আর মার্কিন রাজনীতিবিদেরা এই আন্দোলনকে ইস্যু থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গেছে। এক্ষেত্রে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে ব্রেট কাভানাহর নিয়োগের পর তার বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হয়রানির অভিযোগকে উদাহরণ হিসেবে হাজির করেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার সমাবেশে তারানা বলেন, হঠাৎ করে যৌন হয়রানির শিকার হওয়াদের মুখ খোলা এক আন্দোলনকে নিয়ে পুরুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা নিয়ে কথা হচ্ছে। প্রতিবছর প্রতি চার কন্যা শিশুর একজন আর ছয় ছেলে শিশুর একজন যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। এই আন্দোলন ছিল তাদের নিয়ে। বছরের পর বছর ধরে তারা এসব নিপীড়নের ক্ষত নিয়ে বড় হচ্ছিল।

তারানা বার্ক জানান, তিনি মনে করেন #মিটু আন্দোলন এখন যৌন হয়রানির শিকারদেরই অবহেলা করছে। তিনি বলেন, একটি চরম মুহূর্তে এই আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই আমার মনে হতে থাকলো সব প্রমাণ বিতর্কের মধ্যেই ঘুরপাক থেতে থাকছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের ও সন্তানদের আবার নিজেদের শিক্ষিত করতে হবে। যাতে বুঝতে পারি ক্ষমতা ও সুবিধা সবসময় ধ্বংস করতে ও নিতে হয় না। সেবা দিতে আর সৃষ্টিতেও ব্যবহার করা যায়।’

বার্ক জানান, তিনি চান এই আন্দোলন আবারও এক দশক আগে নির্ধারণ করা চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার ইস্যুগুলোতে ফিরে যাক। বলেন, #মিটু নিয়ে আমার লক্ষ্য হলো এটি যৌন হয়রানি মুক্ত একটি বিশ্ব দেখতে পাওয়ার লক্ষ্য অর্জনের অংশ হয়ে উঠুক। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস সেই পৃথিবী আমি গড়ে তুলতে পারবো।