স্ট্রাসবার্গ হামলা

হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই সন্দেহভাজনের বাড়িতে গ্রেনেডের সন্ধান!

এখনও নাম-পরিচয় প্রকাশ না করলেও স্ট্রাসবার্গের সন্দেহভাজন হামলাকারী সম্পর্কে কিছু তথ্য সরবরাহ করেছে ফরাসি পুলিশ। উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার দেশ ছাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করলেও সাড়ে তিনশ পুলিশ কর্মকর্তা তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে বলে জানানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার রাতের হামলাকারীর সম্পর্কে আগে থেকেই জানতেন তারা। হামলার দিন সকালে বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে তাকে না পাওয়া গেলেও সেখান থেকে কিছু গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছিল। সরকারবিরোধী উত্তাল আন্দোলনের মধ্যেই এমন একটি হামলা হলো।

_104743667_tv051135992

অর্থনৈতিক সংকট এবং জ্বালানির ওপর কর বাড়ানোর প্রতিবাদে গত ১৭ নভেম্বর থেকে ফ্রান্সে শুরু হওয়া বিক্ষোভ ক্রমান্বয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। ধারাবাহিক আন্দোলনে ফ্রান্সের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষুব্ধ মানুষের নজিরবিহীন সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত এবং শত শত মানুষ আহত হয়। গ্রেফতার করা হয় সহস্রাধিক বিক্ষোভকারীকে। দেশজুড়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে এমন অস্থিরতার মধ্যেই সোমবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। প্রতিশ্রুতি দেন, আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেবেন।

স্ট্রাসবার্গের বিখ্যাত ক্রিসমাস মার্কেটের কাছে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত আটটার দিকে হামলা চালায় ওই সন্দেহভাজন বন্দুকধারী। টহলরত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ হয় তার। এ ঘটনায় প্রাণ হারান তিনজন। আহত হন আরও ১৩ জন।  পুলিশের পক্ষ থেকে সন্দেহভাজন হামলাকারীর বয়স ২৯ বলে জানানো হলেও তার নাম-পরিচয় জানানো হয়নি। স্থানীয় কিছু সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী তার নাম শেরিফ সি। তাকে উগ্রবাদী বিবেচনা করছে পুলিশ। হামলার এক পর্যায়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, আহত অবস্থায় পালিয়ে যান ওই ব্যক্তি। এই ঘটনার পর নুডর্ফের বাসিন্দাদের ঘর থেকে বের না হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়। ফ্রান্সের সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট এর তদন্ত শুরু করেছে।

দেশটির উপ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশঙ্কা, হয়তো দেশ ছেড়েই পালিয়ে গেছেন  সস্দেহভাজন হামলাকারী ।  পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, স্ট্রাসবার্গে জন্ম নেওয়া ওই ব্যক্তির ব্যাপারে আগেই অবগত ছিলেন তারা। সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় তার ওপর নজরদারিও ছিল ফরাসি পুলিশের। হামলার দিন সকালে বাড়িতে তল্লাশি করলেও খোঁজ মেলেনি তার। এফজিপি ‍পুলিশ ইউনিয়নের মুখপাত্র স্টিফেন মরিস বলেন, মঙ্গলবার সকালে নুডর্ফে ওই ব্যক্তির ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালানো হয়েছে। তবে সেখানেও ছিলেন না তিনি। তবে এই তল্লাশিতে কিছু গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস নিরাপত্তা সূত্রকে উদ্ধৃত করে= এখন পযন্ত পাঁচজন ব্যক্তিকে আটক করার কথা জানিয়েছে। তবে মূল সন্দেহভাজন এখনও পুলিশের নাগালের বাইরে। উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরেন্স নুনেজও নিশ্চিত করেছেন যে তিনি একাধিকবার জেলে গিয়েছেন। ফ্রান্সের পাশাপাশি জার্মানিতেও জেল খেটেছেন ওই ব্যক্তি। তবে তার অপরাধ কখনোই সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট ছিলো না। ফ্রান্সের বিএফএম টিভির ভাষ্য, ঘটনার পর হামলাকারী একটি ট্যাক্সিতে করে পালিয়ে যায়। নুডর্ফের একটি থানার কাছেই নামেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে সেখানেই কোথাও বাস করেন হামলাকারী। ওই ট্যাক্সিচালক জানান, হামলাকারী বাম পায়ে আঘাত পেয়েছিলেন।