খাশোগির হত্যাকারী শনাক্তে কংগ্রেসের আহ্বান প্রত্যাখ্যান ট্রাম্পের

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার নির্দেশদাতা শনাক্ত করতে মার্কিন কংগ্রেসের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৈশ্বিক মানবাধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাগনিটস্কি আইন অনুযায়ী গত বছরের অক্টোবরে ট্রাম্পকে আহ্বান জানায় মার্কিন কংগ্রেসের সিনেট কমিটি। ওই আইনে ১২০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। শুক্রবার সেই সময়সীমা শেষ হলেও তাতে সাড়া দেননি ট্রাম্প। কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সিনেটররা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুললেও ট্রাম্প প্রশাসসের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে প্রেসিডেন্টের আইনি ক্ষমতা বলেই ওই আবেদনে সাড়া দেননি তিনি।সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি

গত ২ অক্টোবর নিজের দ্বিতীয় বিয়ের কাগজপত্র সংগ্রহ করতে  ইস্তানব্যুল কনস্যুলেটে গিয়ে খুন হন জামাল খাশোগি। হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নাম উঠে আসলেও তা অস্বীকার করে আসছে রিয়াদ। রিয়াদের দাবি জিজ্ঞাসাবাদের সময় কমকর্তাদের সঙ্গে হাতাহাতিতে খুন হন খাশোগি। তাকে হত্যার পর মরদেহ টুকরো করে ফেলার কথা স্বীকার করেছে সৌদি আরব। মার্কিন গোয়েন্দাদের দাবি এ ধরণের অভিযান চালাতে হলে সৌদি যুবরাজের অনুমোদনের দরকার পড়ে।

খাশোগি খুনের পর গত বছরের ১০ অক্টোবর হত্যার নির্দেশদাতা নির্ধারণে প্রেসিডেন্টকে চিঠি পাঠান মার্কিন সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটি। কমিটির ১১ সদস্যের মধ্যে দশজনের স্বাক্ষর থাকা ওই চিঠিতে ম্যাগনটস্কি আইন অনুযায়ী খাশোগি হত্যার নির্দেশদাতাকে শনাক্তের আহ্বান জানানো। ২০১৬ সালে মানবাধিকার হরণ প্রশ্নে প্রণীত এই আইন অনুযায়ী বিশ্বের যেকোন প্রান্তের দোষী সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। আইন অনুযায়ী চিঠি পাঠানোর ওই দিন (১০ অক্টোবর) পরবর্তী ১২০ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। শুক্রবার সেই সময়সীমা শেষ হলেও কোনও সাড়া দেননি ট্রাম্প।

মার্কিন প্রশাসনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কংগ্রেসের কমিটির আবেদনে সাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্প নিজের বিচক্ষণতা ব্যবহার করে সঠিক সময় নির্ধারণ করবেন’।

কংগ্রেসের আবেদনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাড়া না দিলেও কংগ্রেস নেতাদের লেখা এক চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানিয়েছেন খাশোগি হত্যায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে কংগ্রেসের দাবি এড়িয়ে গিয়ে খাশোগি হত্যার নির্দেশদাতা প্রশ্নে ওই চিঠিতে কিছুই বলা হয়নি।

খাশোগি হত্যার অভিযানে অংশ নেওয়ার অভিযোগে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগি সাউদ আল কাহতানিসহ ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সরাসরি যুবরাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় সিনেটরদের সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছেন ট্রাম্প।