যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত একটি মানবিক সংস্থা মে মাসের শেষের দিকে গাজায় কাজ শুরু করবে। ব্যাপকভাবে সমালোচিত সাহায্য বিতরণ পরিকল্পনার অধীনে তারা এই কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। তবে সংস্থাটি ইসরায়েলকে অনুরোধ করেছে, তাদের কাজ পুরোপুরি চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থাগুলোকে যেন ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ সরবরাহ করতে দেওয়া হয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
গত ২ মার্চের পর থেকে গাজায় কোনও মানবিক সহায়তা পৌঁছায়নি। বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছে যে, প্রায় ৫ লাখ মানুষ অনাহারের মুখে। এটি ওই ভূখণ্ডের মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ।
ইসরায়েল অভিযোগ করেছে, হামাস ত্রাণ সহায়তা চুরি করছে। তবে এ অভিযোগ হামাস অস্বীকার করেছে। ইসরায়েল বলেছে, তারা ততক্ষণ পর্যন্ত গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেবে না, যতক্ষণ না হামাস অবশিষ্ট সব জিম্মিকে মুক্তি দেয়। তবে ইসরায়েল বলেছে, তারা ‘আমেরিকান মানবিক পরিকল্পনা’ সমর্থন করছে।
এই পরিকল্পনা ইসরায়েল থেকেই শুরু হয়েছে এবং এর আওতায় জাতিসংঘ ও মানবিক সংস্থার পরিবর্তে বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে গাজায় সীমিতসংখ্যক তথাকথিত ‘নিরাপদ বিতরণ কেন্দ্র’ ত্রাণ সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত হবে।
নতুনভাবে গঠিত গাজা মানবিক ফাউন্ডেশন (ইএইচএফ) এই কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এক গোপন সূত্র জানিয়েছে, এতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংস্থা বিশেষ করে যারা পরিকল্পনা ও সরবরাহ কাজ করে, তারা জড়িত থাকবে।
সূত্রটি জানিয়েছে, বিতরণকেন্দ্রগুলোতে এই মানবিক সহায়তা-ত্রাণ সংস্থাগুলোর হাতে তুলে দেওয়া হবে, যারা তা সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে বিতরণ করবে।
জিএইচএফকে সহযোগিতা করার জন্য জাতিসংঘ ও অন্যান্য ত্রাণ সংস্থাগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন। তবে তারা উদ্বেগ জানিয়েছে যে, এই অপারেশন বহুদিনের মানবিক নীতিমালা — যেমন: মানবতা, পক্ষপাতহীনতা, স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারবে না।
জাতিসংঘের ত্রাণ প্রধান টম ফ্লেচার এই প্রস্তাবিত অপারেশনের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
তবে জিএইচএফের নির্বাহী পরিচালক জেক উড কিছু উদ্বেগের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, জিএইচএফ কোনও ত্রাণপ্রাপকের ব্যক্তিগত তথ্য ইসরায়েলের সঙ্গে ভাগাভাগি করবে না।
এক পৃথক বিবৃতিতে জিএইচএফ জানায়, ইসরায়েল সম্মত হয়েছে বিতরণ কেন্দ্রগুলোর সংখ্যা বাড়াতে যাতে ‘পুরো গাজার জনগণ উপকৃত হতে পারে। আর যারা বিতরণকেন্দ্রে পৌঁছাতে অক্ষম, তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করারও চেষ্টা চলছে।
তবে ইসরায়েলের জাতিসংঘ মিশন এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
আর আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি বলেছে, এই পরিকল্পনা নিয়ে তাদের উদ্বেগ এখনও রয়েছে।