সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর ভারতে কৃষক লংমার্চ স্থগিত

মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের সঙ্গে ছয় ঘণ্টার আলোচনা শেষে কৃষক লংমার্চ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভা। রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আশ্বস্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই কিষাণ লং মার্চ তুলে নেয় আন্দোলনকারীরা। অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভা জানিয়েছে, তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন কতদূর হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে প্রতি দুই মাস পরপর সরকার রিভিউ মিটিং করবে।

12খরায় কৃষকদের সুবিধা দেওয়া, সেচের পানি, জঙ্গলের অধিকার আইন বলবত, বৃদ্ধ কৃষকদের পেনশন বাড়ানোসহ ১৫ দফা দাবিতে এই লংমার্চ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এ কর্মসূচি প্রত্যাহারের পর সিপিএম বিধায়ক জে পি গাভিদ বলেন, ‘মানুষের অসুবিধা হোক সেটা আমরা চাই না। কৃষকদের অধিকার আদায়ে আমরা পথে নেমেছিলাম। গত বছরও সরকার অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু কোনও প্রতিশ্রুতি রাখা হয়নি। এবার সরকার রিভিউ কমিটি গঠন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। প্রতিশ্রুতি পালন করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে এই কমিটি।’

সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পর অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভা’র সভাপতি অশোক ধাওয়ালে বার্তা সংস্থা পিটিআই’কে বলেন, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ইতিবাচক ফল মিলেছে। আজই আমরা লংমার্চ স্থগিত করবো।

রাজ্য সরকার আগের প্রতিশ্রুতি রাখেনি বলে ২০ ফেব্রুয়ারি রাস্তায় নামে ৫০ হাজার কিষাণ। পদযাত্রা করে ২৭ ফেব্রুয়ারি মুম্বাই যাওয়ার কথা ছিল। সেখানেই আয়োজন করা হয়েছিল মূল অনুষ্ঠানের। এদিকে সামনে লোকসভা নির্বাচন। কৃষক আন্দোলন টনক নড়িয়ে দেয় রাজ্য সরকারের। তাই লিখিতভাবে তাদের দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়। তারপরই আন্দোলন তুলে নেয় কৃষকরা।13

গত বছর মার্চ মাসে অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভার ব্যানারে ৩৫ হাজার কৃষক লংমার্চে শামিল হয়েছিল। নাসিক থেকে শুরু হয়ে সেই পদযাত্রা শেষ হয় মুম্বাইতে। মূলত দাবি ছিল কৃষিঋণ মওকুফ ও ফসলের সহায়ক মূল্য বাড়ানো। তাছাড়া তারা মুম্বাই-আহমেদাবাদ রুটে বুলেট ট্রেন প্রজেক্টের বিরোধিতা করেন। তাদের বক্তব্য, ওই প্রজেক্টের জন্য বহু চাষযোগ্য জমি বেহাত হবে কৃষকদের।

এরপর সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসে কিষাণরা। আলোচনা ফলপ্রসু হওয়ায় আন্দোলন তুলে নেন তারা। অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভা জানিয়েছে, সরকার তাদের অধিকাংশ দাবি মেনে নিয়েছে। কিন্তু মাসের পর মাস কেটে গেলেও সরকার প্রতিশ্রুতি পালন না করায় ফের কৃষকদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধতে শুরু করে। যার ফলশ্রুতি হিসাবে আরও একবার আন্দোলনের পথে ফিরে আসেন তারা। ২৩টি জেলা থেকে কৃষকরা জমায়েত হতে পদযাত্রা করে বৃহস্পতিবার নাসিক ময়দান আসে। সেখান থেকে ১৮০ কিমি পথ পেরিয়ে মুম্বাই যাওয়ার কথা ছিল তাদের। তবে শেষ মুহূর্তে সরকারের আশ্বাসে লংমার্চ থেকে পিছু হটে তারা। সূত্র: কলকাতা ২৪, পিটিআই।