সুদানে জরুরি অবস্থা জারি

উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। শুক্রবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এ ঘোষণা দেন। ভাষণটি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

14জরুরি অবস্থা জারির মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে সবকটি প্রদেশের গভর্নরদেরও বরখাস্তের কথা জানান। গভর্নরদের শূন্য পদে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্তের অভিযোগও আনেন তিনি।

বিদ্যমান কেন্দ্রীয় সরকার বিলুপ্ত করা হলেও বিদায়ী মন্ত্রিসভার পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ পাঁচ মন্ত্রীকে তাদের দায়িত্ব অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এক বছরের জন্য দেশে জরুরি অবস্থা জারি করছি। কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকার বিলুপ্ত ঘোষণা করছি।’

অব্যাহত সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মুখে সম্প্রতি দেশটিতে প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের পদত্যাগের গুঞ্জন তৈরি হয়। এক পর্যায়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সার্ভিস (এনআইএসএস) জানায়, প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করছেন। তাদের এ ঘোষণায় গুঞ্জন-গুজব ডালপালা ছড়ায়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট। তবে তার এ ঘোষণার প্রতিবাদে রাজপথে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে সরকারবিরোধীরা। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

১৯৮৯ সালে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসেন ওমর আল-বশির। তার ৩০ বছরের শাসনের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের সূত্রপাত ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। তার সরকার খাবার ও জ্বালানির ওপর ভর্তুকি বাতিল করলে প্রতিবাদে রাস্তায় নামে মানুষ। এক পর্যায়ে এই বিক্ষোভ সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়।

বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর ধরপাকড়ের শিকার হয় সহস্রাধিক মানুষ। মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা এরইমধ্যে ৪০ ছাড়িয়েছে।