তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার আগে মিসরের সেনাশাসক জেনারেল সিসি’র সঙ্গে তিনি কখনও কথা বলবেন না। টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, যারা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন কেন আমি সিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করছি না, তাদের জন্য এটাই আমার উত্তর।
জেনারেল সিসি’কে একজন কর্তৃত্ববাদী ও সর্বগ্রাসী শাসক হিসেবে আখ্যায়িত করেন এরদোয়ান।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, মিসরের সঙ্গে কেন আমাদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে? কেন আমরা উচ্চপর্যায়ের নেতারা কথা বলছি না? এ বিষয়গুলো দেখা দরকার।
স্পষ্ট ভাষায় কথা বলতে পছন্দ করেন উল্লেখ করে এরদোয়ান বলেন, যারা (পশ্চিমা দুনিয়া) বলে থাকে তারা সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধী তারাই জেনারেল সিসির প্রেসিডেন্সিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এই সিসি ৫২ শতাংশ ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসা মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। কথিত সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধীরা এই সিসির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো তার জন্য লালগালিচা বিছানো হচ্ছে। এই দেশগুলোই ২০১৬ সালে তুরস্কের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের নেপথ্যে ছিল।
রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেন, জেনারেল সিসির সঙ্গে যারা যোগাযোগ রাখছে, ইতিহাস তাদের ভিন্নভাবে মূল্যায়ন করবে।
এরদোয়ান বলেন, মিসরের জনগণ তুরস্কের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, তবে সেটা কখনও জেনারেল সিসি নয়।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৩০ জুন মিসরের ইতিহাসের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মুসলিম ব্রাদারহুড নেতা মোহাম্মদ মুরসি। এর এক বছরের মাথায় ২০১৩ সালের ৩ জুলাই সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুরসিকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন সেনাপ্রধান জেনারেল সিসি। প্রতিবাদে মুরসি সমর্থকরা রাস্তায় নামলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন ব্রাদারহুডের প্রায় হাজারখানেক নেতাকর্মী। অভ্যুত্থানে সমর্থন দেয় ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলো। সরকারিভাবে বিবৃতি দিয়ে মুরসি সমর্থকদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে জেনারেল সিসি’কে পৃষ্ঠপোষকতা দেয় সৌদি আরব।
সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করা হয়। মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় দলটির প্রায় হাজারখানেক নেতাকর্মীকে। গ্রেফতার করা হয় কয়েক হাজার মুরসি সমর্থককে। কারাগারে পাঠানো হয় মিসরের ইতিহাসের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে। সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর, আনাদোলু এজেন্সি।