গড় আয়ু ২০ মাস কমিয়ে দেবে বিষাক্ত বাতাস!

বিশ্বজুড়ে বিষাক্ত বাতাসের কারণে বর্তমান সময়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের প্রত্যাশিত গড় আয়ু ২০ মাস কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। বুধবার (৩ এপ্রিল) প্রকাশিত ‘স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার (এসওজিএ)’ ২০১৯ প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি
যৌথভাবে ‘স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার’ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হেলথ ইফেক্টস ইন্সটিটিউট ও ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়া। প্রতিবেদনের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে প্রতি ১০ জনে প্রায় একজনের মৃত্যুর ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে বায়ুদূষণ। ম্যালেরিয়া, সড়ক দুর্ঘটনা ও ধূমপানের চেয়েও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে এটি। কারণ, বাইরে যানবাহন ও শিল্প-কারখানা থেকে সৃষ্ট বায়ুদূষণ এবং ঘরের ভেতরে রান্নাঘর থেকে সৃষ্ট নোংরা বাতাসের সংমিশ্রণ ঘটে ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে।

প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার শিশুদের গড় আয়ু ৩০ মাস কমে যেতে পারে। আর সাব সাহারান আফ্রিকায় শিশুদের গড় আয়ু কমে যেতে পারে ২৪ মাস। পূর্ব এশিয়ায় বায়ুদূষণের কারণে শিশুদের গড় আয়ু ২৩ মাস কমবে। অবশ্য, উন্নত বিশ্বের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ নয়। সেখানকার শিশুদের প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমবে ৫ মাসের কম।

হেলথ ইফেক্টস ইন্সটিটিউট-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট রবার্ট ও’ কিফ বলেছেন, ‘শিশুদের প্রত্যাশিত আয়ু কমে যাওয়ার বিষয়টি সত্যিকার অর্থেই একটি ধাক্কা। জাদুকরী কিছু দিয়ে এর সমাধান সম্ভব নয়, তবে সরকারগুলোকে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে ফুসফুসজনিত জটিলতার কারণে ৪১ শতাংশ, টাইপ টু ডায়াবেটিসের কারণে ২০ শতাংশ, ফুসফুস ক্যান্সারে ১৯ শতাংশ, হৃদরোগে ভুগে ১৬ শতাংশ এবং স্ট্রোকের কারণে ১১ শতাংশ মানুষের মৃত্যুর জন্য বায়ুদূষণ দায়ী।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ সর্বোচ্চ পিএম ২.৫ মাত্রার বায়ুদূষণের মুখোমুখি হয়। বাতাসে ওই মাত্রার দূষণ কণার উপস্থিতি থাকলে শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতা ও হৃদরোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে, কানাডা, সুইডেন ও নিউ জিল্যান্ডের বাতাসে এ দূষণ কণার উপস্থিতি সবচেয়ে কম। মালদ্বীপ, ব্রুনাই ও এস্তোনিয়ার অবস্থানও সেদিক থেকে ভালো।