কঠোর শরিয়াহ আইন কার্যকর করলো ব্রুনাই

আন্তর্জাতিক সমালোচনা উপেক্ষা করে কঠোর শরিয়াহ আইন কার্যকর শুরু করেছে ব্রুনাই। বুধবার (২ এপ্রিল) থেকে নতুন এ আইন কার্যকর হচ্ছে। এর আওতায় সমকামীদের পাথর ছুড়ে হত্যার বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি চুরির অপরাধে অঙ্গচ্ছেদসহ আরও কিছু অপরাধে কঠোর সাজার কথা বলা হয়েছে এ আইনে।

ব্রুনাইয়ের সুলতান
৪ লাখ ২০ হাজার জনসংখ্যার দেশ ব্রুনাইয়ের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মুসলিম। দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালু থাকলেও ১৯৫৭ সালের পর থেকে কারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি। ২০১৩ সালে কঠোর শরিয়াহ আইন প্রচলনের উদ্যোগ নিয়েও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পিছিয়ে আসে ব্রুনাই সরকার। তবে এবার সে চাপ উপেক্ষা করেই দেশটিতে কঠোর শরিয়াহ আইন কার্যকর শুরু হয়েছে।

নতুন আইনে সমকামিতার শাস্তি হিসেবে পাথর ছুড়ে হত্যার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়াও চুরি-ডাকাতির শাস্তি হিসেবে হাত বা পায়ের পাতা কেটে ফেলার কথা বলা হয়েছে। ব্রুনাইতে সমকামিতা আগে থেকেই অবৈধ ছিল। এতদিন সমকামিতার জন্য ১০ বছরের সাজা প্রদানের বিধান চালু ছিল। নতুন এ আইনটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মুসলিমদের জন্য প্রযোজ্য হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অমুসলিমদের ওপরও তা প্রয়োগ করা হবে।

২০১৪ সালে ব্রুনাইতে সীমিতভাবে শরিয়া পেনাল কোড চালু করেন সুলতান বোলকিয়াহ৷ তবে তা সীমাবদ্ধ ছিল জরিমানা কিংবা কারাদণ্ড প্রদান পর্যন্ত। ব্যভিচার বা শুক্রবারের জুমার নামাজে অংশ না নেওয়ার জন্য জরিমানা ও জেলের বিধান চালু করা হয়েছিল। শরিয়াহ আইন ও প্রচলিত আইনের সংমিশ্রণে সাজা প্রদান করা হতো। তখনই সুলতান ঘোষণা করেছিলেন, কয়েক বছরের মধ্যে পুরোদমে শরিয়াহ আইন চালু হবে। গত শনিবার ব্রুনাই সরকারের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল বুধবার (৩ এপ্রিল) থেকে কার্যকর হবে আইনটি।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নতুন এই শাস্তির বিধান নিয়ে তীব্র উদ্বেগ জানিয়েছে। একে ‘নিষ্ঠুর ও অমানবিক’ বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন বলেছেন, এই শাস্তির বিধান ‘বর্বর ও প্রাচীন’ এবং এটি এমন কিছু কাজের জন্য, যা অপরাধ নয়।’

মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-এর গবেষক রাচেল চোওয়া-হাওয়ার্ড এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এ ধরনের নিষ্ঠুর ও অমানবিক শাস্তিকে বৈধতা দেওয়া যে কোনও দেশের জন্যই বিপজ্জনক’।