জলবায়ু পরিবর্তনকে ‘দুর্যোগ’ ঘোষণা যুক্তরাজ্যের

যুক্তরাজ্যে জলবায়ু পরিবর্তনকে ‘দুর্যোগ’ ঘোষণার ব্যাপারে একমত হয়েছেন দেশটির পার্লামেন্ট সদস্যরা। তবে এই আইনে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সরকার পদক্ষেপ নিতে বাধ্য থাকবে না। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

_106759699_mediaitem106759678

সোমবার (১৫ এপ্রিল) অধিকার কর্মীদের বিক্ষোভে অচল হয়ে পড়ে লন্ডন। সেন্ট্রাল লন্ডনে জড়ো হয়ে বড় ধরনের বিক্ষোভ করেন তারা। তাদের দাবি, জলবায়ু পরিবর্তনকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। মার্বেল আর্চ, অক্সফোর্ড সার্কাস, পিকাডিকালি সার্কাস ও পার্লামেন্ট স্কয়ারের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৬৮২ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে লন্ডন পুলিশ।

এরপর বৃহস্পতিবার পার্লামেন্ট থেকে এমন সিদ্ধান্ত আসলো। পার্লামেন্টে এই প্রস্তাব উত্থাপন করা লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেন, এটা অনেক বড় ধাপ।  পার্লামেন্ট স্কয়ারে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে করবিন বলেন, এই সিদ্ধান্তে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সরকার ও পার্লামেন্টকে প্রভাবিত করতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে এক হয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বলতে চাই যে জলবায়ু সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তি ও পদক্ষেপ তিনি এড়িয়ে যেতে পারেন না।

পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, এখন জলবায়ু নিয়ে জরুরি ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে। তবে তিনি লেবার পার্টির দাবি অনুযায়ী এই অবস্থা ঘোষণার ব্যাপারে সমর্থন দেননি।

লন্ডনে জলবায়ু দুর্যোগ ঘোষণার দাবিতে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী থেকে শুরু করে শিশু-সন্তান নিয়ে সদ্য বাবা-মা হওয়া নারী-পুরুষ, বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে শহুরে কর্মী, কিশোর থেকে শিক্ষকেরা লন্ডনের চারটি গুরুত্বর্পূর্ণ স্থান দখল করে রেখেছেন। পুলিশ বারবার তাদের সরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। বিঘ্নিত হচ্ছে শহরের স্বাভাবিক জনজীবন। যুক্তরাজ্য এবং অন্য ৩৩টি দেশে একই ধরণের ছোটখাটো ‘জনজীবন বিঘ্নকারী’ ঘটনা ঘটছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে, বিক্ষোভকারীদের সবচেয়ে বড় সফলতা হলো লাখ লাখ মানুষ তাদের বার্তা শুনছে। তাদের সেই বার্তাটি হলো, বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক পরিণতি ভোগ করতে যাচ্ছে আর বিপর্যয় এড়াতে পরিবর্তনশীল পরিবর্তন আনতে হবে। শত শত নিবন্ধ, সম্পাদকীয়, রেডিও এবং টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের মধ্য দিয়ে এক্সটিঙ্কশন রেবেলিয়ন-এর বার্তা মূল ধারায় প্রতিফলিত হচ্ছে।

ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের বেশ কিছু শহরে ‘জলবায়ু জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করা হলেও পদক্ষেপ স্পষ্ট নয়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ সহনীয় মাত্রায় আনবেন তারা। কয়েকটি কাউন্সিল প্রতিশ্রতি দিয়েছে যে তারা ব্যাটারি চালিত গাড়ি ও পরিবেশবান্ধব বাড়ি তৈরি করবেন।