গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর

চলমান দাঙ্গার মধ্যে দেশের সব নাগরিকের কাছে সহিষ্ণু আচরণের প্রত্যাশা জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমেসিংহে। এর পাশাপাশি গুজব এড়িয়ে চলার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক পোস্টের মাধ্যমে দেশের জনগণকে এই বার্তা দিয়েছেন তিনি। দেশজুড়ে কারফিউ জারির পরও শ্রীলঙ্কায় মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় এক ব্যক্তি হত্যার শিকার হয়েছে। সোমবার রাতে ৪৫ বছর বয়সী ওই মুসলিম কাঠমিস্ত্রীকে তার নিজের কারখানায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে একদল দাঙ্গাবাজ। 

রনিল বিক্রমেসিংহে

তিন সপ্তাহ আগে ইস্টার সানডে’র দিনে দেশটির ৩টি গির্জা ও কয়েকটি হোটেলে সিরিজ বোমা হামলায় ২৫৩ জন নিহত হয়েছিল। হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস বিবৃতি দেওয়ার পর থেকেই দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে হয়রানি ও হুমকির শিকার হয়ে আসছে মুসলিম সম্প্রদায়। এরপর থেকেই সেখানে জরুরি অবস্থা জারি ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় রবিবার ফেসবুকে শুরু হওয়া বিরোধের জেরে রাজধানী কলম্বোর উত্তরের কয়েকটি জেলায় মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। 

কলম্বো থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরের চিলাও শহরে এক দোকানদারের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে এই দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। ‘হাসাহাসি করো না। একদিন তোমাদেরও কাঁদতে হবে’; মুসলিম ব্যক্তির দেওয়া এই ফেসবুক পোস্টকে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের প্রতি দেওয়া বার্তা হিসেবে নেয়। এরপর তার দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকেই দাঙ্গার সূত্রপাত। এই ভয়াবহ দাঙ্গার মধ্যে দেশের জনগণের প্রতি টুইটারে বার্তা দিয়েছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বিক্রমেসিংহে।  ওই বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি দেশের সব নাগরিককে শান্ত থাকার ও ভুল তথ্যে কান না দেওয়ার অনুরোধ করছি।’
উল্লেখ্য, মুসলিমবিরোধী সহিংসতার ধারাবাহিকতায় শ্রীলঙ্কায় সোমবার থেকে সাময়িকভাবে ফেসবুক, ভাইবার, ইমো, স্ন্যাপচ্যাট, ইনস্টাগ্রাম, মেসেঞ্জার, হোয়াটস অ্যাপ ও ইউটিউবের মতো সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হলেও এই প্রতিবেদন রচনার সময় পর্যন্ত টুইটার বন্ধের খবর পাওয়া যায়নি। ইস্টার হামলার ঘটনা সম্পর্কে টুইটে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করতে নিরাপত্তা বাহিনী অব্যাহত প্রচেষ্টা জারি রেখেছে। তবে এমন সহিংস পরিস্থিতি ঘটনার চলমান তদন্ত ও অনুসন্ধানকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন তিনি।  

 

প্রাথমিকভাবে তিন জেলায়, এবং পরে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করেও দাঙ্গা থামানো যায়নি। একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে এএফপি জানিয়েছে, দাঙ্গাবাজরা সংঘবদ্ধ হয়ে একজন কাঠমিস্ত্রীর কারখানায় গিয়ে ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে তাকে রক্তাক্ত করে। হাসপাতালে নেওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।