রমজানে আল আকসা মসজিদে যেতে ইসরায়েলি বাধার মুখে ফিলিস্তিনিরা

রমজান মাসে ইসরায়েলি দখলদারিত্বে থাকা আল আকসা মসজিদে যেতে বাধার মুখে পড়ছেন ফিলিস্তিনিরা। আরব আমেরিকান এক উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠিত ওয়াশিংটন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল মনিটর জানিয়েছে, মুসলমানদের কাছে পবিত্র মাস রমজানে আল আকসায় যেতে বহু সংখ্যক ফিলিস্তিনি আবেদন করলেও কেবলমাত্র ১৬ বছরের নিচে ও ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স্কদেরই মসজিদটিতে যেতে দেওয়া হচ্ছে। আর কেবল শুক্রবারে সব বয়সী মহিলারাই সেখানে প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছেন। তবে কেন অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না সে বিষয়ে কোনও কিছুই জানাচ্ছে না ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।আল আকসা মসজিদ চত্বরে নামাজরত এক ফিলিস্তিনি (পুরনো ছবি)

পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণটি একইসঙ্গে মুসলিম ও ইহুদিদের জন্য পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত হয়। মুসলিমরা একে আল হারাম আল শরিফ নামে ডেকে থাকেন। আর ইহুদিরা এ স্থানটিকে ডাকেন টেম্পল মাউন্ট নামে। ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর যখন ইসরায়েল এই এলাকায় প্রবেশাধিকার পায় তখন শুধু মুসলিমরাই আল-আকসায় নামাজ পড়তে পারতো। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় প্রার্থনার সুযোগ পেত ইহুদিরা। ১৯৬৭ সালের পর থেকে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে রেখেছে। পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের অবিভাজ্য রাজধানী বলে দাবি করে থাকে ইসরায়েল। অবশ্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশ ইসরায়েলের এই দখলদারিত্বকে স্বীকৃতি দেয় না।

সোমবার আল মনিটরের খবরে বলা হয়েছে, দশ বছর আগে রমজান মাসে আল আকসায় প্রবেশ করতে পশ্চিম তীরের জেরুজালেমে ফিলিস্তিনিদের অনুমতি দেওয়া শুরু করে ইসরায়েল। সাধারণত বয়স বিবেচনা ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সাথে ইসরায়েলের রাজনৈতিক সম্পর্ক বিবেচনা অনুমতি পাওয়ার যোগ্যতা বলে বিবেচিত হয়। অনুমোদন দেওয়ার আনুষ্ঠানিক কোনও শর্ত নেই। কেবলমাত্র বিবেচনার ওপরই অনুমতি দেয় ইসরায়েল। আবেদনকারীরা প্রবেশের অনুমতির জন্য আবেদন করে কিন্তু কেন বাতিল করা হয়েছে তা জানানোর বাধ্যবাধকতা নেই।

আল মনিটরের খবরে বলা হয়েছে, ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি পুরুষেরা আল আকসায় যেতে একইভাবে আবেদন করতে পারে। তবে এবারে এই বয়স সীমার পুরুষদের কেনও অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না তার কোনও কারণ জানায়নি ইসরায়েল। আর ১৬ থেকে ২৯ বছর বয়সীরা আবেদনের যোগ্য নয় বলেই বিবেচিত হয়।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ওয়ালিদ ওয়াহাদান আল মনিটরকে বলেছেন, আল আকসায় প্রবেশকে অধিকার বলে বিবেচনা করে থাকে ফিলিস্তিনিরা। তিনি বলেন, দশ বছর আগে ধর্মীয় উপলক্ষে প্রবেশের জন্য এসব পদক্ষেপ ঘোষণা করে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। তবে এখন তারা বেশ কিছু শর্তও জুড়ে দিয়েছে।

ওয়াহাদান বলেন, সময়ে সময়ে এসব শর্ত পাল্টে যায়। কখনও কখনও বলা হয় আবেদনকারীকে অবশ্যই বিবাহিত হতে হবে। বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তরা আবেদন করতে পারবে না। এছাড়াও নিরাপত্তার অজুহাতে দেখিয়ে হাজার হাজার মানুষের আবেদন বাতিল করা হয়।