কলকাতায় দুই আসনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে রহস্য

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে কলকাতার দুটি আসনে ভোটার সংখ্যা হুট করে কমে যাওয়ায় বিস্মিত দেশটির নির্বাচন কমিশন ও রাজনীতিকরা। রবিবার বিকাল ৩টার পর থেকেই সেখানে উল্লেখযোগ্য হারে ভোটার কমতে থাকে। ২০১৪ লোকসভা নির্বাচন থেকেও এবার ভোটার উপস্থিতি অনেক কম ছিল। কিন্তু ভোটার উপস্থিতি কমে যাওয়ার সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে না পাওয়ায় তৈরি হয়েছে রহস্য।

কয়েক দশকের মধ্যে ভারতের সবচেয়ে তিক্ততাপূর্ণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে রবিবার (১৯ মে)। দেড় মাস ধরে সাতটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। আগামী ২৩ মে (বৃহস্পতিবার) ফল ঘোষণা করা হবে। পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য ৪০টি আসন থেকে কলকাতা উত্তর ও দক্ষিণের এই দুটি আসনে বরাবরই ভোটার সংখ্যা অনেক কম থাকে। তবে ইতিহাস পাল্টে দিয়ে তীব্র গরমের মধ্যেও এদিন সকাল বেলা থেকেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটার উপষ্থিতি দেখা যায়। ভাবা হচ্ছিলো ২০১৪ থেকে এবারের ভোটার উপস্থিতি অনেক বেশি হবে।

কলকাতা উত্তরে দুপুর ১টার সময় ভোটার সংখ্যা ছিলো ৪৩.৬ শতাংশ। বিকাল ৩টার মধ্যে সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৪.৯ শতাংশ। তবে দিন শেষে সেটার সংখ্যা বড়জোর ৬১.১ শতাংশ ছিলো বলে জানায় নির্বাচন কমিশন। শেষ ৩ ঘণ্টায় ভোটার বেড়েছে মাত্র ৬ শতাংশ। অন্যদিকে কলকাতা দক্ষিণে দুপুর ১টার সময় ভোটার সংখ্যা ছিলো ৪৩.৮ শতাংশ। বিকাল ৩টার মধ্যে সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৮.৬ শতাংশ। তবে দিন শেষে সেটার সংখ্যা ৬৭ শতাংশ। ২০১৪ সালে এই হার ছিলো ৬৯.৩ শতাংশ।

নির্বাচন কমিশন জানায়, বিকাল ৩টার পর ভোটার সংখ্যা কমতে থাকে। সকাল ৭টার সময় যেই চিত্র ছিলো তার একদম উল্টো দৃশ্য হাজির হয় বিকালে। বিকাল ৩টার পর এমন পরিস্থিতি চমকে দিয়েছে কর্মকর্তাদের। অবাক হয়েছেন রাজনীতিকরাও। তৃণমূল নেতারাও ভেবেছিলেন এবারের ভোটার সংখ্যা বেশি হবে।

বিগত সময়ে বাঙালিরা যেভাবে ভোট দিতো এবার পরিবর্তন দেখা গেছে সেই ধরনেও। রাজ্যে মোট ভোটার উপস্থিতি ছিলো ৮৩.৮ শতাংশ। গতবার এই সংখ্যা ছিলো ৮১.১ শতাংশ। কলকাতা উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী মালা রয় বলেন, ইভিএমে কারিগরি ত্রুটি ছিল। ভিভিপিএটি প্রক্রিয়া নিয়েও অভিযাগ ছিল। ফলে সকাল থেকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ভোটারদের। তবে নির্বাচন কর্মকর্তাদের দাবি, এটা কম ভোটার উপস্থিতির কারণ হতে পারে না। কেননা, পরে ভোটদান প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হয়েছে।