মালিবাগে পুলিশের গাড়িতে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার আইএস-এর

ঢাকার মালিবাগ মোড়ে রবিবার পুলিশের গাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে জঙ্গি তৎপরতা বিষয়ক খবরের মুনাফাভিত্তিক ওয়েবসাইট সাইট ইন্টেলিজেন্স। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশে সংঘটিত কোনও হামলায় আইএস-এর দায় স্বীকারের খবর পাওয়া গেলো।06

ইতোপূর্বে গুলশানের হলি আর্টিজান হামলা এবং গুলিস্তান মার্কেটে চালানো হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহতের ঘটনায় জঙ্গিদের দায় স্বীকারের খবর দেয় সাইট ইন্টেলিজেন্স।

২৬ মে রবিবারের ঘটনায় রাত ৮টা ৫৩ মিনিটে মালিবাগ মোড়ে ফ্লাইওভারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ওই গাড়িতে থাকা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাশেদা আক্তার ও রিকশাচালক লাল মিয়াসহ দুই পথচারী আহত হন। আহতদের প্রাথমিকভাবে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঘটনাস্থলে থাকা পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পুলিশের একটি গাড়িতে বোমা জাতীয় কিছু মারা হয়েছে। তবে সেটি কী ধরনের বোমা তা বলতে পারছি না। ঘটনাস্থলে অপরাধ তদন্ত (সিআইডি) শাখা এসেছে। তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিস্তারিত জানাতে পারবেন।’

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের কন্ট্রোলরুমের ডিউটি অফিসার মো. কামরুল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।’

প্রত্যক্ষদর্শী পলওয়েল জি ফিলিং স্টেশনের ডেলিভারি ম্যান মো. রাশেদ শেখ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা সবাই ফিলিং স্টেশনে বসে ছিলাম। রাত পৌনে ৯টার দিকে বিকট একটি শব্দ হয় এবং সামনেই তাকিয়ে দেখি পুলিশে একটি গাড়িতে আগুন জ্বলছে। এই দেখে স্টেশনে থাকা এক্সটিংগুইশার নিয়ে আগুন নেভাতে ছুটে যাই। সেখানে দেখি তিনজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন নারী পুলিশও ছিলেন। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে কীভাবে এই ঘটনা ঘটেছে তা বলতে পারি না।’

এর আগে গত ২৯শে এপ্রিল ঢাকার গুলিস্তানে ককটেল বিস্ফোরণে তিন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছিল আইএস। তখন বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছিল পুলিশ। এর এক মাসেরও কম সময়ের মাথায় রবিবার রাতে মালিবাগ মোড়ে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো।

দুই বছরেরও বেশি সময় আগে গুলশানের হলি আর্টিজান হামলার দায় স্বীকার করেছিল আইএস। দুনিয়াজুড়ে আলোড়ন তৈরি করা ওই হামলায় ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। নিহতদের মধ্যে ৯ জন ইতালি, ৭ জন জাপান, ৩ জন বাংলাদেশি এবং ১ জন ভারতীয় নাগরিক। এছাড়া জঙ্গিদের হামলায় দুই পুলিশ সদস্যও নিহত হন।

সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে পাঁচ হামলাকারীও নিহত হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে আরও একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়; যাকে পরে রেস্টুরেন্টের কর্মচারী হিসেবে শনাক্ত করা হয়। হামলাকারীদের মধ্যে অনেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলো। এরা শিক্ষিত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। মামলার তদন্তে ঘটনার সঙ্গে মোট ২১ জন জড়িত ছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। এর মধ্যে ঘটনার দিন ও পরে ১৩ জনই নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে নিহত হয়।