চুক্তিহীন ব্রেক্সিট রাজনৈতিক আত্মহননের শামিল: ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

চুক্তিহীন ব্রেক্সিট রাজনৈতিক আত্মহননের শামিল বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। মঙ্গলবার দ্য টেলিগ্রাফে লেখা এক নিবন্ধে নিজের এমন অবস্থানের কথা জানান তিনি। তবে তার অবস্থানকে পূর্বসূরি বরিস জনসনের পুরোপুরি বিপরীত হিসেবে আখ্যায়িত করেছে রয়টার্স। কেননা সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনের মতে, অক্টোবরের মধ্যেই যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করা উচিত। সেটা চুক্তিসহ কিংবা চুক্তি ছাড়া যেটাই হোক।

nonameএর আগে ব্রেক্সিট ইস্যুতে কোনও সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। আগামী ৭ জুন তার পদত্যাগের কথা রয়েছে। থেরেসা মে-র পদত্যাগের ঘোষণার পর ডাউনিং স্ট্রিটের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী নেতাদের একজন জেরেমি হান্ট।

ব্রেক্সিট নিয়ে জেরেমি হান্টের মন্তব্যে প্রধানমন্ত্রীত্বের দৌড়ে থাকা অন্যদের সঙ্গে তার বিতর্কের সূত্রপাত ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

২০১৬ সালের ব্রেক্সিট গণভোটের রায় অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ রাত ১১টায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ ত্যাগের কথা ছিল যুক্তরাজ্যের। ব্রেক্সিট পরবর্তীকালে ইইউ-র সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের শর্ত নির্দিষ্ট করে তৈরি হয় ব্রেক্সিট চুক্তি। এ চুক্তি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস করানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও থেরেসা মে তিন দফায় তা হাউস অব কমন্সে পাস করাতে ব্যর্থ হন। তবে তৃতীয় দফায় চুক্তিটি পার্লামেন্টে তোলার আগে ইইউ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ব্রেক্সিট বিলম্বিত করতে সমর্থ হন থেরেসা মে। ব্রেক্সিট ইস্যুতে নিজ দলের পার্লামেন্ট সদস্যদের পাশাপাশি বিরোধী দলের সদস্যদের রাজি করানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলেও শেষ পর্যন্ত তাতে সফলতা পাননি তিনি।

এক বিবৃতিতে থেরেসা মে বলেছেন, তিনি না পারলেও তার উত্তরসূরী হয়তো পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট ইস্যুতে সমঝোতা তৈরি করতে পারবেন। এই ধরনের সমঝোতা কেবল তখনই সম্ভব যখন বিতর্করত সব পক্ষ আপোস করতে রাজি হবে।

৭ জুন থেরেসা মে-র পদত্যাগের পর ১০ জুন থেকে ক্ষমতাসীন টরি পার্টির নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। আগ্রহী অন্যদের মধ্যে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ, পরিবেশমন্ত্রী মাইকেল গভ, সাবেক ব্রেক্সিটবিষয়কমন্ত্রী ডমিনিক রাব, ররি স্টুয়ার্ট, জেরেমি হান্ট, এস্টার ম্যাকভে ও আন্দ্রেয়া লিডসম।

ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির পরাজয় এবং নতুন গঠিত ব্রেক্সিট পার্টির জয়ের ফলে ধারণা করা হচ্ছে সম্ভাব্য টরি নেতাদের সবাই ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াতেই গুরুত্ব দেবেন। সূত্র: রয়টার্স।