বেসামরিক শাসনের দাবিতে উত্তাল সুদানের রাজপথ

বেসামরিক শাসনের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে সুদানের রাজপথ। রবিবার রাজধানী খার্তুমের রাজপথে নেমে আসেন হাজার হাজার মানুষ। এ সময় বিক্ষোভকারীরা বেসামরিক প্রশাসনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি দাবি জানান। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

12আন্দোলনকারীদের অনেকেই জাতীয় পতাকা নিয়ে বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন। পতাকা উঁচিয়ে তারা ‘সিভিলিয়ান, সিভিলিয়ান’ বলে স্লোগান তোলেন। খার্তুমের বাইরে দেশের অন্যান্য স্থানেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে সুদানের গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর অন্যতম জোট দ্য সুদানিজ প্রফেশনালস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, এক সংবাদ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে তাদের সদর দফতরে অভিযান চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। তবে সেনাবহিনীর পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনও অভিযানের নির্দেশ দেওয়ার কথা অস্বীকার করা হয়েছে।

এ মাসের  গোড়ার দিকেই সুদানের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল সুদানিজ প্রফেশনালস অ্যাসোসিয়েশন (এসপিএ)। বেসামরিক সরকার না আসা পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিল দলটি। মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় জড়িত থাকা তিন বিরোধীদলীয় নেতাকে আটকের পর এমন ঘোষণা দেয় এসপিএ।

সুদানের দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে উৎখাতের জন্য গত বছরের ডিসেম্বর থেকে সেদেশে বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই বিক্ষোভের মুখে গত ১১ এপ্রিল ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি। দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয় সামরিক বাহিনী পরিচালিত ট্রানজিশনাল মিলিটারি কাউন্সিল (টিএমসি)। বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয় তারা। তবে ক্ষমতা কাঠামো থেকে বশির ঘনিষ্ঠদের সরানো এবং বেসামরিক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভকারীরা খার্তুমে অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। দেশজুড়ে চালানো সেনা অভিযানে নিহত হয় শতাধিক মানুষ। গ্রেফতার হন বিরোধীদলীয় প্রভাবশালী তিন রাজনীতিকসহ আরও অনেকে।

দলীয় নেতাদের গ্রেফতারের পরপরই সেনা কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয় সুদানিজ প্রফেশনালস অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সুদানে একটি বেসামরিক সরকার  রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে নিজেদের ক্ষমতায় আসীন হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পরই এ আন্দোলন শেষ হবে।’ এমন পরিস্থিতিতেই শনিবার রাতে এসপিএ-র সদর দফতরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অন্যদিকে বেসামরিক শাসনের দাবিতে রবিবার নতুন করে রাজপথে নামে দেশটির গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারীরা।