হুমকি দেওয়ার ক্ষেত্রে ইরানকে সতর্ক হতে বললেন ট্রাম্প

হুমকি দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে ইরানকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, এসব হুমকি উল্টো তাদের দিকেই ঘুরে যেতে পারে। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তিতে নির্ধারিত ইউরেনিয়াম মজুদ সীমা বাড়ানো নিয়ে তেহরানের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।তেহরানের একটি পারমাণবিক স্থাপনা ঘুরে দেখছে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি

২০১৫ সালের ১৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানির সঙ্গে পরমাণু নিয়ন্ত্রণবিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে ইরান। বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু গত বছর ইউরোপীয় মিত্রদের বাধা সত্ত্বেও ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে নতুন করে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার ভাষ্যমতে, চুক্তিতে অনেক ত্রুটি রয়ে গেছে। ইরানকে নতুন চুক্তিতে বাধ্য করাতে চান তিনি। কিন্তু তেহরান তাতে রাজি হয়নি।

ওয়াশিংটন-তেহরান উত্তেজনার মধ্যে গত বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, ‘৭ জুলাই থেকে আমাদের ইউরেনিয়াম মজুদের মাত্রা আর ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ থাকবে না। আমরা এই প্রতিশ্রুতি একপাশে সরিয়ে রাখবো। আমরা এটা ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ থেকে বাড়াবো, যতটা আমরা চাই, যতটা আমাদের প্রয়োজন, যতটা আমাদের দরকার পড়বে’।

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণিবক চুক্তিতে ইরানের ইউরেনিয়াম মজুদ সীমা ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। বাণিজ্যিক জ্বালানি উৎপাদনের জন্য এই মজুদ সীমা যথেষ্ট। তবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে গেলে প্রয়োজন পড়ে ৯০ শতাংশের বেশি ইউরেনিয়াম মজুদ।

ইরানের প্রেসিডেন্টের ঘোষণার পর বুধবার রাতে কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘ইরান কেবলমাত্র নতুন হুমকি দিয়েছে। রুহানি বলেছেন, চুক্তি না থাকলে তারা প্রয়োজনে যে কোনও পরিমাণ ইউরেনিয়াম মজুদ করবে। এই হুমকি নিয়ে সতর্ক হয়ে যাও ইরান। এই হুমকি তোমাদের দিকে এমন আঘাত করতে পারে যে আঘাত কেউ কখনও পায়নি’।

ফ্রান্সের তরফ থেকেও ইরানকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, চুক্তি বাদ দিয়ে তাদের কোনও লাভ হবে না। প্যারিস বলছে, চুক্তি চ্যালেঞ্জ করা হলে তা মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনাকেই কেবল বাড়াতে পারবে।

তবে ইরান বলে আসছে, চুক্তি লঙ্ঘন করছে না তারা। ২০১৫ সালে সই হওয়া পরমাণু সমঝোতা অনুযায়ী ইরান ৩০০ কেজি পর্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করতে পারতো। তবে ওই সমঝোতার ২৬ ও ৩৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, অপর পক্ষ এ সমঝোতা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে তেহরান এর কোনও কোনও ধারার বাস্তবায়ন স্থগিত রাখতে পারবে।  ওই শর্তের কথা মনে করিয়ে দিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল ততক্ষণ থাকবো যতক্ষণ অন্য পক্ষও তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।