চীন-রাশিয়ার যৌথ বিমান টহল, জাপান ও দ. কোরিয়ার কড়া প্রতিক্রিয়া

চীনের সঙ্গে প্রথমবারের মতো যৌথ বিমান টহল চালানোর কথা জানিয়েছে রাশিয়া। জাপান সাগর ও পূর্ব চীন সাগরের পরিকল্পিত একটি রুটে এই টহল চালানো হয়। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চারটি বোমারু বিমানের টহলে সহায়তা দেয় যুদ্ধবিমান। যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে এর জবাব দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। সিউল দাবি করেছে, মঙ্গলবার সকালে রুশ বিমান অনধিকার প্রবেশ করলে যুদ্ধবিমান দিয়ে অগ্নিতরঙ্গ ও মেশিনগানের গুলি ছুড়ে সতর্ক করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, এই ঘটনায় রাশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া উভয় দেশের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছে জাপান।noname

বিতর্কিত দোকদো/তাকেশিমা দ্বীপের আকাশে এই অনধিকার প্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার দখলকৃত এই অঞ্চলটির কর্তৃত্ব জাপানও দাবি করে থাকে। দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি, মঙ্গলবার সকালে চীন ও রাশিয়ার বিমান কোরিয়া আকাশ প্রতিরক্ষা চিহ্নিতকরণ অঞ্চলে (কেএডিআইজেড) প্রবেশ করে। এছাড়া আলাদাভাবে রাশিয়ার একটি এ-৫০ যুদ্ধবিমান দ্বীপের কাছে দুইবার সিউলের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া।

গত কয়েক বছরে বিভিন্ন কারণে ওই অঞ্চলে রাশিয়া ও চীনের বোমারু ও পরিদর্শন বিমান প্রবেশ করেছে। তবে এবারই প্রথমবার রাশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে এমন ঘটনা ঘটলো বলে জানিয়েছে বিবিসি।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিরপেক্ষ সমুদ্রসীমায় পূর্ব পরিকল্পিত রুটে দুটি ক্ষেপণাস্ত্রবাহী টিউ-৯৫এমএস বিমান চীনের হং-৬কে বোমারু বিমানের সঙ্গে যোগ দেয়। এসব বিমানকে সহায়তা দেয় এ-৫০ ও কংজিং-২০০০ যুদ্ধবিমান। টেলিভিশনে প্রচারিত এক বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, চীন ও রাশিয়ার যৌথ টহলের সময় দক্ষিণ কোরিয়ার পাইলটেরা বিতর্কিত দোকদো/তাকেশিমা দ্বীপের ওপর বিপজ্জনক মহড়া চালায়। ওই দ্বীপ থেকে অন্তত ২৫ কিলোমিটার দূরে টহল চালানো হয়েছে বলে দাবি করা হয় বিবৃতিতে।

তবে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী দাবি করেছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল নয়টা নাগাদ পাঁচটি বিমান কেএডিআইজেড-এ প্রবেশ করে। তাদের গতিরোধ করতে দক্ষিণ কোরিয়ার এফ-১৫ ও এফ-১৬ বিমান মোতায়েন করা হয়। সেনাবাহিনীর তরফে দাবি করা হয়েছে, অনধিকার প্রবেশের সময় দশটি অগ্নিতরঙ্গ ও মেশিনগানের ৮০ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে। রাশিয়ার একটি এ-৫০ বিমান আকাশসীমা ত্যাগ করে আবারও প্রবেশ করলে আরও দশটি অগ্নিতরঙ্গ ও ২৮০ রাউন্ড মেশিনগানের গুলির মুখে পড়ে বলে দাবি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী।

এদিকে এই ঘটনায় রাশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া দুই দেশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলেছে টোকিও। দোকদো/তাকেশিমা দ্বীপের ওপর নিজের সার্বভৌমত্ব দাবি করায় জাপান সরকার বলছে, রাশিয়া তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিক্রিয়াও চরম নিন্দাজনক বলে জানিয়েছে টোকিও।