মোদির পক্ষে কঙ্গনাসহ ৬১ বলিউড তারকার সাফাই

ভারতজুড়ে চলা ‘অসহিষ্ণুতা’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কয়েকদিন আগে চিঠি লিখেছিলেন স্বনামধন্য পরিচালক অপর্ণা সেন ও মণি রত্নম এবং ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহসহ ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। ওই চিঠির জবাবে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) শিল্পি সমাজের ৬১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব পাল্টা চিঠি দিয়ে মোদির পক্ষে নিজেদের অবস্থান ব্যক্ত করেছেন তারা। এই খোলা চিঠিতে আগের চিঠির প্রেরকদের আক্রমণ করা হয়েছে ‘নির্দিষ্ট ক্ষোভ, মিথ্যা বর্ণনা এবং পরিষ্কার রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব’-এর অভিযোগ তুলে। নতুন চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন, সেন্সর বোর্ডের প্রধান প্রসূন যোশী, বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌত, চিত্র পরিচালক মধুর ভান্ডারকর, অভিনেতা বিবেক অগ্নিহোত্রী এবং ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী ও রাজ্যসভার সদস্য সোনাল মানসিং এর মতো ব্যক্তিরা।

কঙ্গনা রনৌত ও মাধুর ভান্ডারকার
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) নরেন্দ্র মোদিকে লেখা খোলা চিঠিতে দেশজুড়ে ঘৃণাজনিত অপরাধ ও সংখ্যালঘুদের প্রতি নৃশংসতার ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে উদ্বেগ জানান ভারতের ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। চিঠিতে লেখা হয়েছিল ‘প্রিয় প্রধানমন্ত্রী...মুসলিম, দলিতসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পিটিয়ে মারার ঘটনা শিগগিরই বন্ধ হওয়া দরকার। আমরা ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য দেখে অবাক হয়েছি, সেখানে বলা হয়েছে, ২০১৬-সালে এই ধরনের নৃশংস ঘটনার সংখ্যা ৮৪০-এর কম নয়। দোষীদের শাস্তি দেওয়ার হারও নির্দিষ্টহারে কম।’ তারা অভিযোগ করেন, জয় শ্রী রাম ধ্বনি নিয়ে অনেকেই বাড়াবাড়ি করছেন। জয় শ্রী রাম ধ্বনি ক্রমাগত যুদ্ধ ধ্বনিতে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা। এই ধ্বনিকে কেন্দ্র করে ভারতের নানা প্রান্তে গণপিটুনিসহ বিভিন্ন অপ্রত্যাশিত ঘটনার যে অভিযোগ উঠছে, চিঠিতে তার কড়া সমালোচনা করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ওই চিঠির বক্তব্যকে সমর্থন করে লেখেন, বক্তব্য ‘প্রায় সঠিক।'

মঙ্গলবারের সে চিঠির বক্তব্যের বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার লেখা পাল্টা চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, মোদি যুগেই সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতাসহ সরকারের সমালোচনা করতে পারছে আমজনতা। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘একটি খোলা চিঠি যেটি প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৯ সালের ২৩ জুলাই এবং লেখা হয়েছিল নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে, সেটি আমাদের বিস্মিত করেছে। ঊনপঞ্চাশ জন স্বঘোষিত ‘অভিভাবক' ও দেশের ‘চৈতন্যের রক্ষক' তাদের নির্দিষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং পরিষ্কার রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও উদ্দেশ্য প্রদর্শন করেছেন।'

সেই চিঠিতে আরও লেখা হয় ‘আমাদের মতে এই চিঠি একটি মিথ্যে বর্ণনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অক্লান্ত প্রচেষ্টাকে নেতিবাচকভাবে দেখানোর চেষ্টা। এই চিঠির স্বাক্ষরকারীরা অতীতে যখন উপজাতি এবং প্রান্তিক মানুষরা নকশাল সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছিলো তখন নীরব ছিল। যখন ভারতকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছিল তখনও তারা নীরব ছিল।’

উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই এক মুসলিম ব্যক্তিকে জোর করে ‘জয় শ্রী রাম' বলাতে চেয়ে মারধর করা হয়। এক সপ্তাহ আগে উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলার এক মাদ্রাসার ছাত্রদের ‘জয় শ্রী রাম' বলতে বলে মারধর করার ঘটনা ঘটে।