কাশ্মিরের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন সিনেটরদের উদ্বেগ

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে চলমান অচলাবস্থায় সেখানে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দুজন মার্কিন কংগ্রেস সদস্য। কংগ্রেসের প্রভাবশালী দুই সদস্যের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, কাশ্মিরের বিশেষ সুবিধা কেড়ে নিয়ে সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যের মোতায়েনের ব্যাপারে বিশ্ব নজর দিচ্ছে না। মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। 

https___specials-images.forbesimg.com_dam_imageserve_309797ffd5434c79b0a5d4c016ad26d3_960x0

গত ৫ আগস্ট (সোমবার) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ওই দিন সকাল থেকে জম্মু-কাশ্মিরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগর কার্যত অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে। দোকান, স্কুল, কলেজ ও অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে। কোনও গণপরিবহন নেই। ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা জনশুণ্য রাস্তায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র সেনারা। নিরাপত্তা চৌকি, নজরদারি আর কারফিউর ঘেরাটোপে বন্দি হয়ে পড়েছে কাশ্মিরিদের ঈদের আনন্দ। প্রতি বছরই ঈদুল আজহার অন্তত এক সপ্তাহ আগে থেকে উৎসবের ঢেউ লেগে যায় উপত্যকায়। দলবেঁধে মানুষ বাজারে যায়; পোশাকসহ বিভিন্ন সাজসরঞ্জাম কেনে। বেকারির দোকানগুলোতে সাজসাজ রব পড়ে যায়। তবে এবারের বাস্তবতা একেবারেই আলাদা।

প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির প্রধান এলিওট এল এঞ্জেল এবং সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির ডেমোক্রেট সদস্য রবার্ট মেনেদেজ সোমবার ওই যৌথ বিবৃতিতে বলেন,  ভারত ও পাকিস্তান কাশ্মিরকে বিশ্ব থেকে আলাদা করে ফেলেছে এবং বিশ্ব তা দেখছে না। ভারত কাশ্মিরের বিশেষ সুবিধা কেড়ে নিয়ে প্রচুর সশস্ত্র সেনা মোতায়েন করেছে। কাশ্মিরিদের পরিস্থিতিতে নজর নেই কারও। আমি প্রথমে জানাতে চাই যে সেখানকার আইনপ্রণেতারা কি বলছেন এবং পরে কাশ্মিরের বাস্তবতা তুলে ধরতে চাই।

কাশ্মিরে ভারতের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ হওয়ায় ভারতের সুযোগ ছিলো যে তারা সব নাগরিকদের সমান অধিকার নিশ্চিত করবে। কিন্তু তারা করেছে উল্টো। কাশ্মিরিদের সঙ্গে বাকি সবার চেয়ে খারাপ আচরণ করেছে। জনসমাবেশ, তথ্য অধিকার কিংবা সুরক্ষার দিক দিয়ে তারা আইনি সুবিধা পায়নি।

তারা জানান, কাশ্মিরে সমাবেশের কোনও স্বাধীনতা নেই। অল্প কয়েকজন কাশ্মিরি সেই চেষ্টা করলে ভারতীয় সেনা ও পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয়। কাশ্মিরের কোনও তথ্য অধিকার নিশ্চিত করা যায়নি। সুরক্ষার ক্ষেত্রেও তারা সমান অধিকার পান না।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণতন্ত্রে স্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণ খুবই প্রয়োজন। আমরা আশা করি ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মিরেও এই আদর্শ মাথায় রাখবেন।

কংগ্রেসম্যানরা জানান, বিষয়টিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে পদক্ষেপ নেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অথচ ট্রাম্প সবসময়ই এমন কাজ করছেন। তাদের দাবি, ভারতের কাছে অস্ত্র বিক্রি করার কারণে কাশ্মির নিয়ে কিছু বলছেন না ট্রাম্প।